মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর প্রতিনিধি :
গৃহবধুসহ শিশু অপহরণ মামলার রায়ের ২৪ ঘন্টার মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী লুৎফর রহমানকে (৫০) সৈয়দপুর উপজেলার সোনাখুলী এলাকার ধলাগাছ আদানিপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যনাল-১ এর বিচারক
(জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক আহসান তারেক মামলার রায়ে ওই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডাদেশ দেন। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান র্দীঘদিন থেকে সৈয়দপুরের উল্লিখিত এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। থানা পুলিশ জানায়, সৈয়দপুর থানায় গত ২০০৪ সালে ওই আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পক্ষে বিপক্ষে আদালত শুনানী গতকাল রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেন বিজ্ঞ আদালত।
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চলা মামলার রায়ের দিন আসামি লুৎফর রহমান পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই ওই দন্ডাদেশ দেন বিচারক আহসান তারেক। একই সাথে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার আদালত থেকে আসা গ্রেফতারি পরোয়ানা হাতে পায় সৈয়দপুর থানা পুলিশ। এরপরেই সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসনাত খানের নির্দেশে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ওই আসামীকে গ্রেফতার করতে থানার উপ-পরিদর্শক মো. সাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালায়। বুধবার আদালতের রায়ে তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে তা না জেনেই আসামির পরিবারের সদস্যরা জানায় সে জামিনে আসে। পরে আদালতের রায়ের পর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে জানালে বাড়িতে থাকা আসামি লুৎফর রহমান ঘর থেকে বেড়িয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেস্টা করলে তাঁকে ধাওয়া করে গ্রেফতার করা হয়। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খানের সাথে কথা হলে তিনি পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বিকেলেই তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ধলাগাছ এলাকার রাজমিস্ত্রি মতিয়ার রহমানের স্ত্রী ছাবিয়া খাতুনকে (২২) নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিতেন প্রতিবেশী ওই আসামী। এতে রাজি না হওয়ায় ২০০৪ সালের ১০ জুন দুপুরে গৃহবধূ ও তার শিশু কন্যাকে অপহরণ করেন তিনি। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মতিয়ার রহমান বাদী হয়ে লুৎফর রহমানকে আসামি করে ২০০৪ সালের ১৬ জুন সৈয়দপুর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে সৈয়দপুর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক বাবুল আক্তার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটের ভিত্তিতে ২০০৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধ আমলে নেন আদালত। এরপর ২০০৮ সালের ১২ মে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামির বিরুদ্ধে অানীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ওই রায় ঘোষণা করেন।