বাগেরহাট প্রতিনিধি :
‘লোকের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালিয়েছি তবুও ছেলেকে একটু কষ্ট বুঝতে দিইনি। আজ সেই ছেলে আমাকে কথায় কথায় মারপিট করে, খেতে দেয়না, কিছু হলেই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়, আমার আর বাঁচার কোন ইচ্ছা নেই, আপনারা আমাকে একটু বিষ কিনে দেন’ এভাবে ছেলের নির্যাতনের কথা বলে বিলাপ করছিলেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার নালুয়া গ্রামের মৃত উকিল উদ্দিন তরফদারের স্ত্রী আলেয়া বেগম( ৬২)। শনিবার দুপুরে তিনি চিতলমারী থানায় এসে ছেলের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। নির্যাতিতা মা’ আলেয়ো বেগম জানান, ৮-৯ বছর আগে তার স্বামী উকিল উদ্দিন তরফদার মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর লোকের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে তার একমাত্র ছেলে সুজনকে বড় করে তোলেন। এখনো অসুস্থ শরীর নিয়ে মাঝে মধ্যে লোকের বাড়িতে কাজে যান। বাইরে থেকে যা কিছু রোজগার করেন সবই ছেলের হাতে এনে তুলে দেন তিনি। এ অবস্থায় বৃদ্ধা আলেয়া বেগম বর্তমানে অসুস্থ থাকায় তিনি কাজে যেতে পারেন না। এ পরিস্থিতিতে ছেলে তাকে টাকার জন্য চাপ দেয়। শনিবার সকালে সুজন তার মা আলেয়া বেগমের কাছে টাকা চাইলে তিনি দিতে না পারায় মাকে বেদম মারপিট করে। ছেলের এই নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি থানায় এসে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আলেয়া বেগম জানান, ছেলে তাকে সামন্য ব্যাপারে গায়ে হাত তোলে। সারা রাত বাইরে থেকে জুয়া খেলে ঘরে ফেরে। প্রতিদিন তাকে টাকা দিতে না পারলে এভাবে তাকে মারপিট করে। এখন ধৈর্যের আর বাধ মানেনা। নিরুপায় হয়ে থানায় এসেছি। এ সময় উপস্থিত লোকজনকে তিনি জানান, আপনারা আমাকে একটু বিষ কিনে দেন। আমি আর ঘরে ফিরতে চাইনা। বাড়িতে গেলে যদি ছেলে জানতে পারে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি তাহলে আমাকে আর জ্যান্ত রাখবে না।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল সরকার জানান, আলেয়া বেগমের কাছ থেকে তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খবর৭১/এস;