খবর ৭১:ডান হাতের কব্জির তিনটি আঙুল ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ঝুলছে। সারা শরীর ভেসে যাচ্ছে রক্তে। সোমবার সকালে ভারতের দমদমের বিধান কলোনিসংলগ্ন রেললাইনের ধারে বিস্ফোরণে চোখের সামনে তখন সব ঘোলাটে দেখছেন কাগজকুড়ানি বাসুদেব বিশ্বাস।
কাতরাতে কাতরাতে বলেছিলেন, ‘আমাকে বাঁচান। আমার ছোট ছোট দুটি মেয়ে আছে।’’ বাঁহাত ছোটবেলায় ট্রেনে কাটা পড়েছিল। জখম ডান হাতের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাসুদেব বলেছিলেন, ‘ডান হাত চলে গেলেও ক্ষতি নেই। প্রয়োজনে ভিক্ষা করব। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে চল। নইলে দুটি মেয়ে ভেসে যাবে!’ খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঝোপের ভেতরে বনস্পতির ড্রামের মধ্যে কৌটা আকৃতির ধাতববস্তু দেখে শাসনের সন্ডালিয়া গ্রামের বাসুদেব তার একটি তুলে নেন। এরপরে বনগাঁ শাখার ডাউন লাইনের ধারে সেটি রেখে পাথর দিয়ে ঠুকছিলেন তিনি। আচমকা বিকট শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। ছিটকে পড়েন বছর আটত্রিশের বাসুদেব।
ঘটনাস্থলের কাছেই বাড়ি নন্দ অধিকারীর। তিনি বলেন, ‘বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেছে। বাইরে গিয়ে দেখি, সবাই রেললাইনের দিকে ছুটছে।’
মায়া অধিকারী নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘গোসল সেরে পূজা করছিলাম। প্রথমে বিকট শব্দ। তার পরে চার দিক ধোঁয়ায় ভরে গেল।’
ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসী দেখেন, দুটি হাত বুকের কাছে চেপে ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন বাসুদেব।
গৌতম নস্কর নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য পুরসভার দফতরে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু পুরসভার থেকে বলা হয়, খালপাড় দিয়ে রেললাইনের কাছে গাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রায় আধঘণ্টা ওই অবস্থায় ছটফট করতে থাকেন জখম বাসুদেব। আরপিএফ কর্মী আলতাব হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তার সাহায্যে ডাউন হাসনাবাদ লোকাল থামিয়ে ভেন্ডর কামরায় বাসুদেবকে তোলা হয়।
গৌতমবাবু বলেন, ‘হাতের কাছে স্ট্রেচার ছিল না। গুরুতর জখম অবস্থায় রেললাইন বরাবর হাঁটতে থাকেন ওই ব্যক্তি। বটতলার কাছে ট্রেন দাঁড় করিয়ে আমরা সবাই মিলে ভেন্ডরের কামরায় তুলে দিই তাকে।
খবর ৭১/ ই: