খবর ৭১: পর পর ঘটে যাওয়া রাজধানীর বেশ কয়েকটি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত না করে বা প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করে বিরোধীদলের প্রতি আঙুল তোলা সরকারের এক ধরনের ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল বলে মনে করে বিএনপি। দলটির দাবি, সরকার নিজেই এসব অগ্নিকাণ্ডের হোতা।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার বিষয়ে বুধবার (১৯ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৯ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেন, সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জগঠন এবং বিচার শুরু করায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়।
সভা মনে করে, বিরোধীদলকে নির্মূল করার নীলনকশা হিসেবে ১/১১ অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে জিয়া পরিবারের সব সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার এবং ফরমায়েশি রায় দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার হীন চক্রান্ত করে আসছে। প্রকৃতপক্ষে অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
শুধু জিয়া পরিবাররই নয় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থনকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে সরকার।
বিএনপি মহাসচিব ফখরুল, জনগণের ঐক্য ও দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়াসহ বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানসহ সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রুজু করা মামলা প্রত্যাহার, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে বাধ্য করতে হবে। এটাই বর্তমানে সারা দেশের গণমানুষের দাবি।
সভায় বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রীরা বিএনপিকে দোষারোপ করায়; তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করার দাবিও জানানো হয়। কিন্তু সরকার উল্টো বিরোধী দলের প্রতি আঙুল তোলা মানে ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল বলেও অভিহিত করা হয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও সংগঠনগুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা এবং দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। অবিলম্বে দোষারোপ পরিত্যাগ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া সভায় আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালনের জন্য শ্রমিক দলকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্য সচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি উপস্থিত ছিলেন।