মানসম্মত চিকিৎসায় আর ছাড় নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0
274

খবর৭১: দেশের প্রতিটি হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, শুধু হাসপাতাল তৈরি আর কিছু মেশিন কিনে দিলেই চিকিৎসা হয়ে যাবে না। চিকিৎসাসেবা নির্ভর করে ডাক্তার-নার্সদের ওপর। এ বিষয়গুলোতে ভবিষ্যতে আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

রোববার জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়- হাসপাতালগুলোতে আমরা এখন পর্যন্ত কোয়ালিটি চিকিৎসা দিতে পারছি না। তবে সেবার মানোন্নয়নে সারা দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। ক্যানসার রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। বৈষম্যও রয়েছে। দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা করাতে পারে না। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয় বলে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। আমরা চিকিৎসায় বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংক্রমণব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। কলেরা-ডায়রিয়ায় এখন আর মৃত্যু নেই বললেই চলে। এখন অসংক্রামক রোগ বেড়েছে। ৬০-৭০ শতাংশ মৃত্যুই অসংক্রামক রোগে। বেশি মৃত্যু হয় ক্যানসার ও হার্ট অ্যাটাকে। এছাড়া স্তন ক্যানসারে মৃত্যু হয় ৯ শতাংশ, গলার ক্যানসারেও ১৪ শতাংশ মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আনুষ্ঠানিক হিসাব অনুযায়ী বছরে ১ লাখ লোক ক্যানসারে মারা যায়, আর আক্রান্ত হয় দেড় লাখ। বাস্তব চিত্র এর চেয়ে খারাপ। কারণ অনেক লোক চিকিৎসার আওতার বাইরে থাকে। যে কারণে অনেকেই পরিসংখ্যানের আওতার বাইরে থাকে। দেশে রোগীর তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই স্বল্প। ২০ লাখ মানুষ আছেন ক্যানসার আক্রান্ত। তাদের চিকিৎসায় যে বড় মাপের ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটি আমরা পারিনি। তবে পদক্ষেপ নিয়েছি।

ক্যানসারের কারণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ধূমপানে ক্যানসার বেশি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ, খাবারে দূষণ রোগটির বড় কারণ। ক্যানসার এমন রোগ, কোনো বয়স বা গোত্র রক্ষা পায় না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা ও ডায়াগনোসিসে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। ৮টি বিভাগে ৮টি ক্যানসার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রেখেছি। অনেকগুলো প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি। প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে গুরুত্ব দিচ্ছি। সম্মিলিত উদ্যোগে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। রেজিস্ট্রি নেই, যথেষ্ট পরীক্ষা নেই। এতসব ‘নাই’ এর মধ্যেও আমরা কাজ করছি। এ হাসপাতালকে নিয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে। চিকিৎসকদের অনেক বেশি মানবিক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরীসহ প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here