মহানগর আ’লীগ দক্ষিণের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক

0
460
মহানগর আ’লীগ দক্ষিণের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক

খবর৭১ঃ
কোনো রকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা। বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হয়ে সভা বিকাল গড়ালেও ঐকমত্যে আসতে পারেননি নেতারা।

আসন্ন সম্মেলন করা, না করা নিয়ে নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে সরগরম হয়ে উঠে সভাস্থল। তবে মহানগরের অধিকাংশ নেতা কেন্দ্র ঘোষিত সম্মেলন করার পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

কয়েকজন আবার সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ নানা সমস্যা তুলে সম্মেলন না করার পক্ষে মত দেন। বৈঠকে উপস্থিত অন্তত ৮ জন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে দলের ঢাকা মহানগর সম্মেলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেছেন, আমরা দুই মহানগর নেতাদের সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছি।

তবে সম্মেলন আর সিটি নির্বাচন একসঙ্গে সম্ভব হবে না। আমরা অপেক্ষায় আছি নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে সম্মেলন হবে, আর নির্বাচন হলে মহানগরের সম্মেলন হবে নির্বাচনের পর।

মহানগর দক্ষিণের কার্যনির্বাহী সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্র ঘোষিত ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশনা থাকলেও তা পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করছে মহানগরের একটি অংশ।

এই অংশের নেতৃত্বে আছেন নগরের একজন শীর্ষ নেতা। তার পক্ষে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বক্তব্য দেন সহসভাপতি খন্দকার এনায়েতুল্লাহ, আবুল বাশার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, ডা. দীলিপ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, গোলাম আশরাফ তালুকদার প্রমুখ।

প্রায় অভিন্ন সুরে তারা বলেছেন, সামনে ঢাকা সিটি নির্বাচন। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনও আছে। আমাদের সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেজন্য সম্মেলন না করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহিত করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজ্যুলেশন করার পক্ষে মত দেন তারা।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বেঁধে দেয়া ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করতে বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি জানান মহানগরের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মেসবাহুর রহমান ভূঁইয়া রতন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ওমর বিন আবদুল আজিজ, সহ-দফতর সম্পাদক মিরাজ হোসেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, সাজেদা বেগম প্রমুখ।

তারা বলেন, বিগত তিন বছরে কমিটির অনেক ব্যর্থতা আছে। এই ব্যর্থতার পাল্লা আর ভারি করতে চাই না। কেন্দ্র ঘোষিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে হবে। এছাড়া তারা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনে অনিয়মের কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

বলেন, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে যেসব কমিটির ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যারা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিচ্ছেন, তাদের অনুমোদন দিল কে?

আমাদের কোনো কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয়নি। চূড়ান্ত অনুমোদন কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে নিতে হয়। সেটি করা হয়নি। তাহলে এসব কমিটিকে মহানগর অনুমোদিত বলা হচ্ছে কেন? দুর্নীতিবাজ ও অনুপ্রবেশকারীদের স্থান দিতেই মহানগর কমিটিকে পাশ কাটিয়ে চলা হয়েছে বলেও জোরালো বক্তব্য দেন অনেক নেতা।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি শীর্ষ নেতারা। তবে আজ শুক্রবার মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের বর্ধিত সভায় ওবায়দুল কাদের কী সিদ্ধান্ত দেন, সেটির ওপরই আস্থা রেখে বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মহানগর সভাপতি আবুল হাসনাত।

এর আগে অনির্ধারিত এই কার্যনির্বাহী সভা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেন মহানগর সভাপতি আবুল হাসনাত। তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনিও বৃহস্পতিবারের নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন। তবে সম্মেলন করার পক্ষে জোরালো মত দেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here