নির্বাচনের ৩ বছর পর শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউপির চেয়ারম্যান হিসেবে আকবর আলীর দ্বায়িত্ব গ্রহণ

0
373

শেরপুর থেকে আবু হানিফ :
আজ সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দ্বায়িত্বভার গ্রহন করেন। একই সময়ে শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন ইউপি কার্যালয় পরিদর্শনে গেলে তাকে ইউপি পরিষদের নানা কার্যক্রম তুলে ধরেন চেয়ারম্যান আকবর আলী । চেয়ারম্যান আকবর আলী এর আগে ২৩ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রজনীগন্ধায় শপথ গ্রহণ করেন । এসময় তাকে শপথ পাঠ করান ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল ইসলাম। জেলা প্রশাসন বলছে, ২২ মে বুধবার নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেট এবং কমিশনের উপ-সচিব মিজানুর রহমান সাক্ষরিত পত্রের নির্দেশনার আলোকে ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। যদিও নির্বাচনের পর থেকে আজ অবধি দ্বায়িত্বে থাকা আব্দুর রউফ উল্লেখিত শপথ ও দ্বায়িত্ব গ্রহনকে অবৈধ বলে দাবী করেছেন । আব্দুর রউফ বলেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল গ্রহণ করা হয়েছে এবং ১৪ মে করা রায় স্থগিতের আবেদনের বিষয়ে শুনানীর জন্য আগামী ১৯ জুন ধার্য রয়েছে- যা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কমিশন গেজেট প্রকাশ করায় আমাকে আইনি লড়াই-ই করতে হবে। কারণ আমি মনে করি যে রায় হয়েছে তা সঠিক নয়, আর রায় যেহেতু সঠিক না তাই শপথ কিংবা দ্বায়িত্ব গ্রহন কোনটায় যুক্তিযুক্ত না বরং অবৈধ।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশনের গেজেট নির্দেশনার আলোকে ওই শপথ গ্রহণ করানো হয়েছে। যেহেতু রায়ে নিন্ম আদালতের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা ছিলনা । অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন আইনগত বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করেই গেজেট করেছে সুতরাং সেই গেজেটের আলোকেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। এক্ষেত্রে কোন ব্যতয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নে লাঙল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুর রউফকে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আকবর আলীর সাথে ৪৭ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাতে আব্দুর রউফের প্রাপ্ত ভোট ৭ হাজার ৫৫৭ ও আকবর আলীর ভোট ৭ হাজার ৫১০ দেখানো হয়। এরপর গেজেট প্রকাশ ও দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। অন্যদিকে প্রথম থেকেই ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনসহ দৌড়ঝাপ চালিয়ে যেতে থাকেন নিকটতম ঘোষিত প্রার্থী আকবর আলী।
এক পর্যায়ে ভোট কারচুপির কারণে কলুরচর ব্যাপারীপাড়া কেন্দ্র বাতিল ও পুনঃভোটগ্রহণ এবং টাকিমারী ও জঙ্গলদি কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার দাবিতে শেরপুরের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন আকবর আলী। মামলাটি বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকাবস্থায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের প্রভাব খাটানোর আশঙ্কায় উচ্চ আদালতে বিবাদী আব্দুর রউফের রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে তা ময়মনসিংহ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়। সেখানে দু’টি কেন্দ্রের ভোট গণনায় আকবর আলীকে ৮৪ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল এবং নির্বাচন কমিশনকে গেজেট প্রকাশ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহেই আব্দুর রউফের পক্ষে আপীল করা হলেও বিচারিক ট্রাইব্যুনালের রায় স্থগিত করা হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here