মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বানিয়াচংয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি খান বাহাদুর এহিয়া কলেজ। কলেজ প্রতিষ্ঠায় এলাকার দায়িত্বশীলদের অসহযোগিতার কারণে কলেজের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। নিভৃত হাওরাঞ্চলে উচ্চ শিক্ষার আলো ছড়াতে দৌলতপুর ইউনিয়নের কাদিরগঞ্জে কলেজ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন সিলেটের তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার জামাল উদ্দীন আহমেদ।
সূত্র জানায়, কেবি এহিয়া ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ৪ একর জমি দান করেন কলেজের নামে। এস্টেটের ফান্ড থেকে কলেজের অবকাঠামো নির্মাণে বরাদ্দ দেন নগদ ২০ লাখ টাকা। ১০ লাখ টাকায় ৬০ শতক জায়গায় মাটি ভরাটের কাজ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কমিশনার জামাল উদ্দীন আহমেদ। পরে পাশের কাদিরগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে এলাকাবাসীকে নিয়ে সুধি সমাবেশ করেন। একই দিন অধ্যক্ষ নিয়োগের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার নিদের্শও দিয়েছিলেন কমিশনার। কিন্তু এলাকার দায়িত্বশীলরা কলেজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেননি। ফলে বরাদ্দের বাকি ১০ লাখ টাকা তৎকালীন ইউএনও ফেরত পাঠিয়ে দেন।
কাদিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম জানান, প্রস্তাবিত কলেজের পাশে ৩টি হাইস্কুল রয়েছে। আশপাশে কোনো কলেজ নেই। এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ধনাঢ্য ঘরের শিক্ষার্র্থীরা দূরের কলেজে পড়াশুনা করতে পারলেও গরিব ঘরের সন্তানরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
এ প্রসঙ্গে কেবি এহিয়া ওয়াকফ এস্টেট ১নম্বর কাচারির নায়েব সিরাজুল ইসলাম খান জানান, ওয়াকফ এস্টেটের জমি ও বরাদ্দে আতুকুড়া কেবি এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। সেখানকার চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরীসহ স্থানীয়রা সব রকম সহযোগিতা করায় ওই স্কুল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই কলেজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন স্থানীয় ক’জন নেতা দলবাজি করেছেন। কিছুদিন পর বিভাগীয় কমিশনার প্রমোশন পেয়ে বদলী হয়ে যান। পরে কলেজ প্রতিষ্ঠায় এলাকার দায়িত্বশীল কেউ এগিয়ে আসেননি। ইউএনও সন্দ্বীপ কুমার সিংহ বদলির আগে বরাদ্দের অবশিষ্ট ১০ লাখ টাকা ফেরত পাঠিয়ে দেন।
দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. লুৎফুর রহমান জানান, কলেজের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালুর জন্য ওয়াকফ এস্টেটের বানিয়াচং ম্যানেজারকে মাঝে মধ্যে তাগিদ দিয়েছি। তিনি পদক্ষেপ নেননি।
ইউএনও মো. মামুন খন্দকার বলেন, কলেজ দাঁড় করাতে বিভাগীয় কমিশনার উদ্যোগ নিলেও স্থানীয়দের ছিল অসহযোগিতা। তাদের উদ্যোগের হাত প্রসারিত হলে কলেজটি দাঁড় করার সুযোগ এখনও রয়েছে।
খবর৭১/ইঃ