খবর ৭১:ফরমালিন দিয়ে ধুয়ে অ্যালুমিনিয়াম সালফেটসহ কিছু রাসায়নিক দ্রব্য মেশালেই টাটকা হয়ে যেত পচা মাংস।
তার পর হোটেল-রেস্টুরেন্টে দেদারসে সেই মাংস বিক্রি করত একটি প্রতারক চক্র।
তাদের সরবরাহ করা মাংস অবলীলায় খেতেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু কেউই বুঝতে পারতেন না যে তারা পচা মাংস খাচ্ছেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দিনের পর দিন চলেছে পচা মাংসের এই কারবার। সেখান থেকে পচা মাংস বাংলাদেশ ও নেপালেও পাচার হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি ভাগাড় থেকে সংগ্রহ করে পচা মাংস পাঠাত গুদামে। সেখানেই ফরমালিন দিয়ে এসব মাংস ধোয়া হতো। এর পর চর্বি ও হাড় আলাদা করা হতো।
এর পর পচন ঠেকাতে ওই মাংসে ক্যালসিয়াম প্রোপিওনেট মেশানো হতো। আর যাতে দুর্গন্ধ না হয় তার লেড সালফেট ব্যবহার করা হতো।
এতেই পচা মাংস প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হতো না। বরং এসব মাংস যেন খাওয়ার সময় টাটকা মনে হয়, সে জন্য অ্যালুমিনিয়াম সালফেট মেশানো হতো।
পচা মাংসের কারবারে জড়িত অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একজনকে। তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, ‘বাংলাদেশের মাংস ব্যবসায়ীদেরও তারা সরবরাহ করেন।
শুক্রবার সকালে দমদমের আড়াই নম্বর গেটের কাছে একটি ফ্রায়েড চিকেনের দোকানে মাংস দেয়ার সময় গ্রেফতার করা হয় আরেক পচা মাংস সরবরাহকারীকে।
তাদের জেরার বরাতে পুলিশ জানায়, প্রতারক চক্র পচা মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণে যেমন অবিশ্বাস্য দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে, তেমনই এর বিক্রিতেও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে রাসায়নিক মেশানো পচা মাংস খোলাবাজারের পরিবর্তে ফ্রোজেন মার্কেট, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বিক্রি করা হতো।
এ ব্যবসার ফাঁদ বিস্তারে ছকও ছিল নিপুণ। হোটেল-রেস্তোরাঁয় অবাধ চালানোর পাশাপাশি নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল করে মাংস বাজারজাত করা হয়। এ ছাড়া বেনামি ব্র্যান্ডের আড়ালেও চলত ব্যবসা।
পুলিশ জানিয়েছে, ভাগাড় থেকে হিমঘর পর্যন্ত মাংস সরবরাহে জড়িত চক্রের সন্ধান পেয়েছেন তারা।
চক্রে জড়িতদের ধরতে কলকাতা শহরের লি রোড, ট্যাংরা, কসবা ও নারিকেলডাঙায় চলছে অব্যাহত তল্লাশি। এ ছাড়া চব্বিশ পরগনা ও হাওড়াতেও অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
এসব অভিযান থেকে পুলিশ ধারণা করছে, পচা মাংস ব্যবসায় জড়িতদের মূল হোতা কলকাতাতেই অবস্থান করছেন।
খবর ৭১/ ই: