খবর ৭১:বাউন্সারের আঘাতে মাথার খুলি উড়ে যাওয়ার অবস্থা। পরিস্থিতি খারাপ দেখে রাজশাহীর স্থানীয় এক ক্লিনিকে নিয়ে সিটিস্ক্যান করা হয়। রিপোর্ট পজেটিভ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ফিরে আবারও ব্যাটিংয়ে নেমে পড়েন সাদমান ইসলাম অনিক।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিবি) চলমান শেষ রাউন্ডে রাজশাহীতে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে উদ্বোধনীতে সাইফ হাসানের সঙ্গে ২৯ রান যোগ করতেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মধ্যাঞ্চলের ওপেনার সাদমান। ফের যখন ব্যাটিং করতে নামেন তখন দলের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৭৮ রান।
মাঠে ফিরে পূর্বাঞ্চলের বোলারদের ওপর রীতিমতো চড়াও হন মধ্যাঞ্চলের এ ওপেনার। চতুর্থ উইকেটে আব্দুল মজিদ ও শুভাগত হোমকে সঙ্গে নিয়ে ২০৪ রানের জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান। সোহাগ গাজীর স্পিনে ধরা পড়ার আগে ১৫৭ বলে ১১ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ১১২ রান করেন সাদমান।
সাদমানের ম্যাচের নায়ক আব্দুল মজিদ। তিনি চোট নিয়েও সাদমানকে ছাড়াই ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন।
চোট পেয়ে সাদমান হাসপাতালে যাওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেট মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে ৭৭ রানের জুটি, এপর মেহরাব হোসেন জুনিয়রের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৭২ রান, চতুর্থ উইকেটে সাদমানের সঙ্গে ১২৬ রানের জুটি গড়তেই মাংশপেশিতে টান লেগে মাঠ ছাড়েন আব্দুল মজিদ। তার আগেই অব্যশ ১৫৯ রান তুলে নেন তিনি।
চোটাক্রান্ত হওয়া মজিদ মাঠে ফিরতে পারবেন কিনা সন্দেহ ছিল। সেই সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় দিনে বুধবার মাঠে ফেরেন তিনি। চোট নিয়ে খেলেও ডাবল সেঞ্চুরি করে ক্ষান্ত হন মধ্যাঞ্চলের এ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
প্রথম দিনে ১৫৯ রানে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া মজিদ দ্বিতীয় দিনে যখন ফের ব্যাটিংয়ে নামেন তখন দলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৪০ রান। মজিদ মাঠে নামার পর ১৪ রানের ব্যবধানে ফেরেন শুভাগত হোম ও ইরফান শুক্কুর। শুভাগত ৮ বাউন্ডারিতে ৭১ রান করলেও মাত্র ৩ রানে ফেরেন ইরফান।
অষ্টম উইকেটে মোহাম্মদ শরীফকে সঙ্গে নিয়ে ৭৬ রানের জুটি গড়েন মজিদ। আর এই জুটি গড়ার পথেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যান মধ্যাঞ্চলের এ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান।
বুধবার মধ্যাহ্নবিরতি যাওয়ার ঠিক আগের ওভারে এনামুল হক জুনিয়রকে প্রথমে ছয় এবং পরে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আব্দুল মজিদ। লাঞ্চবিরতি থেকে ফিরে আবারও ব্যাটিং শুরু করেন তিনি।
তবে এই ফেরায় আর বেশি দূর এগোতে পারেননি। এনামুল হক জুনিয়রের বলে সোহাগ গাজীর হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেয়ার আগে ২৪৬ বলে ২২ চার ও ৮ ছক্কায় ২০৫ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেন মজিদ। অবশ্য তার আগেই মধ্যাঞ্চল চলে যায় রানের পাহাড়ে।
মজিদের ডাবল এবং সাদমানের সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৫৪৬ রান সংগ্রহ করে মধ্যাঞ্চল। পূর্বাঞ্চলের হয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন এনামুল হক জুনিয়র। এছাড়া ৩ উইকেট নেন আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী। ২ উইকেট শিকার করেন সাইফুদ্দিন।
জবাব দিতে নেমে পাল্লা দিয়ে লড়াই করছে পূর্বাঞ্চল। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে লিটন কুমার দাসের সেঞ্চুরিতে (১৩৯*)। ৩ উইকেটে ২৬৪ রান সংগ্রহ করেছে পূর্বাঞ্চল। ৬৭ রান করে আউট হয়েছেন তাসামুল হক। ৩১ রানে অপরাজিত আছেন আফিফ হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১১২.৫ ওভারে ৫৪৬/১০ (মজিদ ২০৫, সাদমান ১১২, শুভাগত ৭১, শরিফ ৪১; এনামুল হক ৫/১৮৮)।
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৪৬ ওভারে ২৬৪/৩ রান (লিটন ১৩৯*, তাসামুল ৬৭, আফিফ ৩১*)।
খবর ৭১/ ই: