মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি, নিরাপত্তার কারণে নাইক্ষ্যংছড়ির ৫ স্কুল বন্ধ

0
45

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। এতে বাংলাদেশে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও নিরাপত্তার কারণে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বন্ধ হওয়া বিদ্যালয়গুলো হলো- বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে কামানের গোলা নিক্ষেপের পাশাপাশি বিমান থেকে গোলা বর্ষণ করা হচ্ছে বলে সীমান্তবর্তী প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেষে মিয়ানমার অংশে ৩ দিনে অর্ধশতাধিক মর্টার শেলের প্রকট শব্দে ৪৭ ও ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের বাংলাদেশের অভ্যন্তর এসব গোলার আওয়াজে কেঁপে উঠেছে। আর এ কাঁপুনিতে আতঙ্কিত হচ্ছে সীমান্তবাসী।

তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দা সংবাদকর্মী মাহমুদুল হাসান বলেন, কিছু দিন ধরে সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে আমরা যারা স্থায়ী বাসিন্দা আছি, সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছি। তবে সীমান্তে বসবাসকারী অনেকেই ভয়ে নিরাপদে চলে গেছেন।

ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, আমরা যারা এপারে বসবাস করছি সবাই আতঙ্কে আছি, কখন কোন সময় কি হয় জানি না। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, সোমবার সকালে ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারীরা।

এ অবস্থায় মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকার নির্দেশ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। রোববার বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধীন উখিয়ার পালংখালী বিওপি এবং নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধীন হোয়াইক্যং বিওপি ও তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন ও শীন রাজ্যের কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। সম্প্রতি রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ জোরালো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here