দেশে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে

0
72

খবর ৭১: দেশে এখন প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার ১১-৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যেটি ২০১১ সালে ছিল ৫৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত ১৩ বছরে এই হার বেড়েছে ১৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এই বয়সী পুরুষদের মধ্যে বর্তমানে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ১০ এবং নারীদের ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রায়োগিক স্বাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ ২০২৩ এর ফলাফলে উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রতিবেদনটি সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান।

অনুষ্ঠানে জানান হয়, প্রায়োগিক স্বাক্ষরতা নিরূপণের ক্ষেত্রে এ জরিপটি ব্যতিক্রম। কারণ এর মাধ্যমে স্বাক্ষরতার হার যাচাইয়ে নির্বাচিত প্রত্যেক ব্যক্তির ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম ৫০ নম্বর পেলে প্রায়োগিক স্বাক্ষর বলে ধরা হয়। ৭-১৫ বছর এবং ১৫ থেকে অনুর্ধ এ দুটি বয়সের ক্যাটাগরিতে আলাদা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে জরিপ করা হয়েছে। জরিপ পরিচালনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে গত জুন পর্যন্ত। দেশের ৬৫ জেলার চার হাজার ৯৬টি প্রাইমারি স্যাম্পল এরিয়া বা পিএসইউ থেকে ৮১ হাজার ৯২০টি পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতি পিএসইউতে ২০টি করে খানা বা পরিবার ধরা হয়েছে। এ কাজে গণনাকারী ছিলেন এক হাজার ২৪ জন। এর আগে ২০০৮ এবং ২০১১ সালে দুটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছিল।

২০২৩ সালের জরিপ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাত বছর থেকে উপরের বয়সীদের প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষের ৬৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং মহিলার হার ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। পল্লী এলাকায় এ হার ৫৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং মহিলা ৫৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শহর এলাকায় প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং মহিলা ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে স্তরভিত্তিক স্বাক্ষরতার হার তুলে ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, সাত বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন নয় এমন মানুষ রয়েছে ২৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। এছাড়া আংশিক স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন লোক রয়েছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রাথমিক পর্যায়ের স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ রয়েছে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং উন্নত পর্যায়ের স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন লোক রয়েছে ৪৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া এই বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার দক্ষতাভিত্তিক হার পঠন বা শুধু পাঠ করায় দক্ষ মানুষের সংখ্যা ৫৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। লেখার ক্ষেত্রে দক্ষতা বেশি আছে এমন মানুষ ৬৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গাণিতিক হিসাবে দক্ষ মানুষ ৫৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং উপলব্ধিগত দক্ষতা আছে ৫৬ দশমিক ০৮ শতাংশ।

বিবিএস-এর প্রতিবেদনে ১১ থেকে ৪৫ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে বয়ঃভিত্তিক প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হারের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার ২০২৩ সালের জরিপে পাওয়া গেছে ৮৮ দশমিক ০২ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৭১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া ১৬-২০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৮৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৬৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১-২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৮২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২৬-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৫০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ৩১-৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৪৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। ৩৬-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ, যা আগে ছিল ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়া ৪১ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা ২০১১ সালের জরিপে ছিল ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এসব তথ্যে দেখা যায়, প্রত্যেক বয়সী মানুষের মধ্যে প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here