তিস্তা ইস্যুতে ভারতকে ছাড় না দেওয়ার আহ্বান

0
201

খবর ৭১: পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা ইস্যুতে ভারতকে কোনো প্রকার ছাড় না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আইনে মামলা করে সমুদ্র জয়ের মতো এবার তিস্তা জয়ের ঐতিহাসিক নজির স্থাপনে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দেন তারা।

শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে সংহতি জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন চাঁদ, অধ্যাপক মোজাহার আলী, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, সাংবাদিক বাবলু নাগ, শ্রমিক নেতা সবুজ রায়, মসিউর রহমান, নারী নেত্রী সানজিদা আক্তার প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন লংঘন করে একতরফাভাবে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি প্রত্যাহার করছে। তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নেওয়ার কারণে আমাদের উত্তরবঙ্গ মরুভূমির পথে। ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ বিপন্ন। প্রমত্তা তিস্তা ধু-ধু বালু চরে পরিণত হয়েছে।

তারা আরও বলেন, তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। হাজার হাজার মৎস্যজীবী ও মাঝি বেকার হয়ে পথে বসেছে। তিস্তায় পানি না থাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে আবার ভারত নতুন দুটি খাল খননসহ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র করে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের পাঁয়তারা করছে।

বক্তারা বলেন, ১৯৭৯ সালে ডালিয়া পয়েন্টে বর্ষায় তিস্তার পানি প্রবাহের বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেসময় শুষ্ক বা বর্ষার সময় তিস্তা ছিল স্বাভাবিক গতির একটি নদী। এখন বর্ষায় একটু পানি হলেই তলদেশ ভরা এবং চরের পর বিশাল চর জেগে ওঠা তিস্তা বিপদসীমা অতিক্রম করে। পানিপ্রবাহ ব্যাহত করে তিস্তা বাঁধের কারণে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন ডলার। ভারতে নতুন খাল খনন করে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের সর্বনাশা চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা নাহলে উত্তরের জীবনরেখা ধ্বংসের সাথে এই অঞ্চলের কৃষি ও জনজীবন বিপন্ন হয়ে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here