সৈয়দপুরে গৃহবধূর আত্মহত্যা প্ররোচণার মামলায় স্বামী গ্রেফতার

0
160

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে শহরের নয়াবাজারস্থ সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ সংলগ্ন এলাকার এজাজের ভাড়া বাসা থেকে ওই ভাড়াটিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূর নাম জান্নাতি ফেরদৌস জান্নাত (২১)। এ ঘটনায় গৃহবধুর পিতা মো. ফারুকের দায়ের করা আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় স্বামী মো. জাফর ইকবাল ওরফে চাঁন ড্রাইভারকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই মামলায় গৃহবধুর শ্বাশুড়ি তেলকি বেগম (৫০) ও দেবর সুজন মিয়াকে (২৬) আসামি করা হয়েছে। তারা দুজনই পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল ইসলাম।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা মৌয়াগাছ এলাকার মো. ফারুক ওরফে নুস্তির মেয়ে জান্নাতি ফেরদৌস জান্নাতের সঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর আগে শহরের পুরাতন বাবুপাড়া ধোপামাঠ এলাকার মৃত তাহের আলীর ছেলে জাফর ইকবাল চাঁন ড্রাইভারের বিয়ে হয়। জান্নাতী ছিলেন চাঁনের দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর থেকেই জান্নাতি সঙ্গে তার স্বামীর বনিবনা হচ্ছিলো না। প্রায়ই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। কয়েকদিন আগে স্ত্রী জান্নাতকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়ায় ওঠেন স্বামী চাঁন। ঘটনার আগের দিন গত শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে জান্নাতি সঙ্গে তাঁর স্বামী চাঁনের ঝগড়া হয়। পরে ওইদিন রাত তিনটার দিকে স্বামী চাঁন ভাড়া বাসায় গিয়ে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু তিনি স্ত্রীর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে এবং দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে শ্বশুর ফারুক ও থানা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জানালা দিয়ে দেখেন গলায় ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তাঁর দেহ ঝুলছে। পরে সকালে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে জান্নাতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় থানার উপ পরিদর্শক মো. আকমল হোসেন নারি পুলিশের মাধ্যমে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী শেষে লাশ থানায় নিয়ে আসেন।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ভেতর থেকে সিটকিনি লাগানো দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী এটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই বলা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।

এদিকে, ওই গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করে তাঁর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবারের সদস্যরা। অপরদিকে স্বামীর পরিবারের লোকজন বলছে, আত্মহত্যা করেছে জান্নাতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here