খবর ৭১: রাজনীতির মাঠে যখন টানটান উত্তেজনা তখন হঠাৎ করেই ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গণহারে নিজ নিজ ফেসবুকে পদত্যাগ করছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ লিখিতভাগে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির মোহাম্মদপুর থানার ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র বেশ কয়েকজন নেতার পদত্যাগের পর এবার পদত্যাগ করেছে পল্লবীর ৬ নং ওয়ার্ডের দুইজন নেতা। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে আরও অন্তত ১ ডজন নেতা পদত্যাগের অপেক্ষায় আছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুল হকের সম্ভাব্য নির্বাচনী আসনের (ঢাকা -১৬) অন্তর্গত এই ৬নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের দুইজন নেতার পদত্যাগে শুরু হয়েছে নানান জল্পনাকল্পনা। মহানগরের প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে সাবেক কমিটির নেতাদের অবমুল্যায়নের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই পদত্যাদের মাধ্যমে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ছিলেন একসময় এই ৬নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনার। গত সংসদীয় নির্বাচনে তিনি এই ঢাকা-১৬ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হঠাৎ করে আহসান উল্লাহ হাসানের মৃত্যুতে এই আসন অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে যুবদলের ঢাকা মহানগরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিল্টন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয় কে হবে এই আসনে ভবিষ্যৎ এর ধানের শীষের কান্ডারী।
স্থায়ীয় একাধিক নেতা দাবী করেন, ওয়ার্ড বিএনপি’র কমিটি গঠনের নামে আমিনুল হক প্রথমেই আহসান উল্লাহ হাসানের যারা অনুসারী ছিলেন তাদের মাইনাসের মিশনে নামেন। যাদেরকে তিনি বর্তমানে ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃত্বে এনেছেন তারা অধিকাংশই ছিলেন দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে নিস্ক্রিয়। সাবেক কমিটির অধিকাংশ নেতাদের করেছেন অবমূল্যায়ন। শুধুমাত্র হাসান নয় মিল্টনের অনুসারীদের অনেককেই নবগঠিত কমিটি থেকে বাদ দেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক একজন নেতা বলেন, “থানা কমিটির অপেক্ষায় আছি, যদি সেখানেও আমাদের অবমূল্যায়ন করা হয় তাহলে শুরু হবে গনপদত্যাগ”।
গত ২৬ ডিসেম্বর দলের মহানগর কার্যালয় ভাসানী ভবনে উপস্থিত হয়ে সদ্য ঘোষিত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পল্লবী থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সহ সভাপতি মোঃ ভুলু ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন সংগঠনটির আহবায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর আবেদন করে এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন। তাদের পদত্যাগ পত্র অফিস পিয়ন সুজন রিসিভ করে রাখেন।
পদত্যাগ পত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে ও নেতৃত্বে দলের প্রয়োজনে সবসময় রাজপথে আছি ও থাকবো। সাম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ১০ টি ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ্ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এ কমিটির অনুমোদন দেন।
এরমধ্যে পল্লবী থানার ৬নং ওয়ার্ড, শাহআলী থানার ৮ ও ৯৩নং ওয়ার্ড, কাফরুল থানার ৪নং ওয়ার্ড, আদাবর থানার ৩০ ও ১০০নং ওয়ার্ড, মোহাম্মদপুর থানার ৩১, ৩২, ও ৩৩নং ওয়ার্ড এবং বনানী থানার ১৯নং ওয়ার্ড।
পদত্যাগকারী ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আমি আগের ওয়ার্ড কমিটিতে সহ সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। বিএনপি করার কারণে আওয়ামী লীগের এমপির লোকেরা আমাকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করেছে। শত নির্যাতন সহ্য করে বিএনপির সাথে আছি। অথচ বর্তমান কমিটিতে আমাকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। বলতে গেলে আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমি বিএনপিকে ভালোবাসি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ভুকে ধারণ করে বিএনপি করছি। তাই যতদিন বেঁচে থাকবো বিএনপির সাথেই থাকবো। আমার অপমানজনক কোন পদের প্রয়োজন নেই। তাই আমি পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগ করলেও আমি বিএনপির সাথেই আছি এবং থাকবো।