ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছে: রাশিয়া

0
98

খবর৭১ঃ

শনিবার সকালে ক্রিমিয়া সেতুতে জ্বালানি ট্যাঙ্কার থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে বলে রুশ তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।

বিস্ফোরণের পর রাশিয়া বলেছিল, ট্যাঙ্কার থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং রাস্তার ক্ষতি হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। সন্ধ্যায় আবার খুলে দেওয়া হবে।

২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়া দ্বীপটিকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তিকরণের প্রতীক ছিল এই সেতুটি। ২০১৮ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেতুটির উদ্বোধন করেন।

বিস্ফোরণের পর ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, বিস্ফোরণের মাধ্যমে রাশিয়ার ক্ষতি কেবল শূরু। তবে তিনি বিস্ফোরণের পেছনে সরাসরি ইউক্রেনের দায় থাকার ব্যাপারে কোনো কিছু বলেননি।

টুইটারে পোডোলিয়াক বলেন, ‘অবৈধ সবকিছু ধ্বংস করতে হবে, চুরি হওয়া সবকিছু ইউক্রেনে ফেরত দিতে হবে, রাশিয়ার দখলকৃত সবকিছু অবশ্যই নির্মুল করতে হবে।’

ইউক্রেন সরকারের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট টুইট করে আগুনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছে, ‘বিস্ফোরণের আগুন।’

এদিকে ইউক্রেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেতু বিস্ফোরণকে এপ্রিলে রাশিয়ার মস্কভা ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুজার ডুবে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছে। টুইটে মন্ত্রণালয় জানায়, ‘ইউক্রেনীয় ক্রিমিয়াতে রাশিয়ান শক্তির দুটি কুখ্যাত প্রতীক হারিয়ে গেছে। এর পরে কি হবে?’

সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ এবং কর্মীদের রাশিয়া থেকে দক্ষিণ ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই সেতু ব্যবহার করতো মস্কো। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটি একটি বৈধ লক্ষ্য ছিল, কারণ তারা উপদ্বীপটি পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

রাশিয়ান সেনাবাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি সমৃদ্ধ ক্রিমিয়াতে যে কোনো আক্রমণ ক্রেমলিনের জন্য অপমান হিসেবে দেখা হবে।

ইউক্রেনীয়রা সেতুটিকে বিশেষভাবে ঘৃণা করে। সোশাল মিডিয়ায় আগুন লাগা অবস্থায় সেতুটির ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ইউক্রেনীয়দের উল্লাস করতে দেখা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পুতিনের ৭০তম জন্মদিন পালনের ঠিক পরদিন।

সেতুর ওপর দিয়ে সড়ক ও রেল চলাচল বন্ধ থাকায় রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড এবং উপদ্বীপের মধ্যে একটি ফেরি ব্যবস্থা চালু করবে বলে জানিয়েছে ক্রিমিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

ক্রিমিয়ান পার্লামেন্টারি স্পিকার ভ্লাদিমির কনস্টান্টিনভ এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করেছেন ইউক্রেনীয় ভাঙচুরকারীদের। তিনি বলেছেন, সেতুর ক্ষতি ‘দ্রুত পুনরুদ্ধার করা হবে, কারণ এটিতে গুরুতর কিছু হয়নি।’

ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সির উদ্ধৃতি দিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সেতুর ‘জরুরি অবস্থা’ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি সরকারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

১৯ কিলোমিটার এই সেতুটি নির্মাণে ২.৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ক্রিমিয়া দখল করার চার বছর পর রাষ্ট্রপতি পুতিন সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন। এটি ইউরোপের দীর্ঘতম সেতু। রাশিয়ান মিডিয়া এটিকে ‘শতাব্দীর নির্মাণ’ বলেও প্রশংসা করেছে। রুশ কর্মকর্তারা পূর্বে দাবি করেছিলেন, এটি বায়ু, স্থল বা জলের হুমকি থেকে সুরক্ষিত ছিল।

সেতুর ক্রসিংটি ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থিত। একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে বলেছেন, সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে আগুন লাগেনি। রাস্তার পৃষ্ঠে সুস্পষ্ট বিস্ফোরণ বা খণ্ডিত ক্ষতির অভাব এটাই ইঙ্গিত দেয়, ঘটনায় আকাশ পথে সরবরাহ করা কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সম্ভবত নিচ থেকে সুপরিকল্পিত হামলার কারণেও হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here