রোহিঙ্গা সংকট: ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে সহায়তার আহ্বান বাংলাদেশের

0
318
আন্তর্জাতিক আদালতের রায় উপেক্ষা: মিয়ানমারের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগের বিকল্প নেই

খবর৭১ঃ সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের রাজধানী নিয়ামিতে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ আহবান জানান।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নাইজারে শুক্রবার ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৭তম কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইসউফউ। সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ইসলামোফোবিয়ার বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের কার্যকরভাবে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানান।

এসময় আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা প্রশ্নে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়াকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৫ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দেয়ার কথাও জানান জাবেদ পাটোয়ারী।

জাভেদ পাটোয়ারী বলেন, গাম্বিয়াকে আইনি লড়াইয়ে সহায়তার জন্য আমরা ইতোমধ্যে ওআইসির তহবিলে এ অর্থ প্রদান করেছি।

তিনি আরও বলেন, ওআইসির জেনারেল সেক্রেটারিয়েট এখন আইসিজেতে গাম্বিয়ার লড়াইয়ে সহায়তার জন্য একটি বিশেষ হিসাব খুলেছে। আর পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিও তহবিলের জরুরি প্রয়োজনের ইঙ্গিত দিয়েছে।

গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী দাউদা এ জালো সিএফএম-এ রোহিঙ্গা মামলার সর্বশেষ তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, এ আইনি মামলার জন্য আমি ওআইসির সদস্য দেশগুলোর কাছে জরুরি, স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের আহ্বান জানাচ্ছি। সিএফএম-এ রোহিঙ্গা সঙ্কট মূল আলোচ্য বিষয় হিসাবে উঠে আসে।

তিনি আরও বলেন, মামলাটি চালাতে বিশেষ করে আইনজীবীদের অর্থ প্রদানে গাম্বিয়ার প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দরকার। এই মামলার বাদীপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি নামী আইন সংস্থাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত ওআইসির সদস্য দেশগুলোর জন্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা, অর্থনীতি পুনর্নির্মাণের জন্য সদস্য দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর জন্য মানবিক সহায়তার ওপর জোর দেন। ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। এ সময় তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে কোনও ধর্মীয় প্রতীককে অপমান করা নয়। মহাসচিব আরও বলেন, আমরা ইসলাম বিরোধী বক্তব্যের নিন্দা জানাই।

এবারের সম্মেলনের মুল প্রতিপাদ্য হল, ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়া’। মহাসচিব বলেন, সন্ত্রাসবাদ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এর যে কোনও ন্যায্যতাও অগ্রহণযোগ্য। তিনি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ এই অঞ্চল ও বিশ্বব্যাপী এক অন্যতম বিপজ্জনক হুমকি। তিনি সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় শান্তি ও উন্নয়নের জন্য মুসলিম দেশগুলোকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ায় সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এছাড়া সম্মেলনে আরও যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ওয়াহিদা আহমেদ ও রিয়াদ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান এস এম আনিসুল হক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here