অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির পরও শূন্য আসন!

0
520
অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির পরও শূন্য আসন!

খবর৭১ঃ শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো বিধিবিধান না মানার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রেষণে থাকা শিক্ষা ক্যাডারের এ কর্মকর্তার (অধ্যক্ষ) বিরুদ্ধে অভিভাবকদের একাধিক আবেদনও জমা পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তরে। নানা বিষয়ে অভিযোগ তদন্তও করছে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে।

২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতিরিক্ত ৪৪৩ জন ছাত্রী ভর্তির অভিযোগে সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছিল প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত। এই শিক্ষার্থীরা এখনো ঐ প্রতিষ্ঠানেই পড়াশুনা করছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শূন্য আসন দেখিয়ে সাত শতাধিক নতুন শিক্ষার্থীকে ভর্তির উদ্যোগ নেয়। অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, এত শূন্য আসন কোথায় পেল প্রতিষ্ঠানটি।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ফওজিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির একটি শাখার প্রধান শাহ আলম বলেন, ‘আমরা ঢাকা বোর্ড থেকে শাখার অনুমোদন নিয়েছি। সে আলোকেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে।’ এই শিক্ষকের দাবি অসত্য বলে জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঁঞা বলেন, ‘এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য শাখা বা আসন বৃদ্ধি করার কোনো অনুমোদন দেয়নি। তারা সবেমাত্র আবেদন করেছে, যা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদন পায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন পৃথক পৃথক তদন্ত শেষে সুপারিশ করে। প্রাপ্যতা থাকলে অনুমোদন দেয়। কিন্তু ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শ্রেণি শাখা খোলার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আসন না থাকলে ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। আসন শূন্য আছে কিনা সে বিষয়টি আমি অবহিত নই। ’

২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য বিভিন্ন ক্লাসে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর উদ্দেশ্যে গত ১৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। মূল ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মোট ৮৫৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গত ১৬ জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে ২১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেওয়া হয়। আবেদন ফি ছিল ২০৫ টাকা। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৪ জানুয়ারি।

অভিভাবকদের দাবি, এই ভর্তি নিয়ে উচ্চ আদালতে দুটি রিট মামলা আছে। প্রথমটির নিষ্পত্তি হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয়টির আলোকে প্রতিষ্ঠানটি এই ভর্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চিঠির নির্দেশনা যথাযথ নয় বলেও দাবি করেন তারা। বোর্ডের এই চিঠি দেখিয়ে গত ২৪ অক্টোবর ভর্তির জন্য নোটিশ দেয় অধ্যক্ষ। সে আলোকেই সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।

এ বিষয়ে অভিভাবকদের পক্ষে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নজরুল ইসলাম কাজলসহ কয়েকজন অভিভাবক। তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, ২১ জানুয়ারির করা রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের দোহাই দিয়ে ভর্তির কার্যক্রম বাতিল করে এবং টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ৯ মার্চ আরেকটি রিট করা হয়। আদালত রিট মামলা নিষ্পত্তিতে ঢাকা বোর্ডকে নির্দেশ করে। তাতে ভর্তির কোনো নির্দেশনা দেয়নি আদালত। প্রথম রিটের কথা গোপন রেখে দ্বিতীয়টির আলোকে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা দেওয়া অনৈতিক ও আদালতের নির্দেশনার পরিপন্থি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here