করোনা পরীক্ষায় কিটের কোনো সংকট নেই: স্বাস্থ্যসচিব

0
367
করোনা পরীক্ষায় কিটের কোনো সংকট নেই: স্বাস্থ্যসচিব

খবর৭১ঃ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতের হাতে বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ কিট মজুদ রয়েছে। এরপরও আরো কিট আমদানি কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন ১০ হাজার করে পরীক্ষা করতে থাকলে মজুদকৃত কিট দিয়েই আরো অন্তত একমাস চালানো যাবে। এর মধ্যে নিশ্চয়ই আরো কিছু কিট আমরা আমদানী করতে সক্ষম হবো। সুতরাং দেশে করোনা পরীক্ষায় কোনো সংকট নেই। নিশ্চয়ই করোনা পরীক্ষা বৃদ্ধিতে আরো উদ্যোগ নেয়া হবে।

আজ সকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইন ভিত্তিক মিটিং প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির এক বিশেষ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান।

অনলাইন সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) শেখ মুজিবর রহমানসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভার কার্যক্রম সঞ্চালনের দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

বিশ্বে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে তা বাংলাদেশে আসবে জানিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আরো বলেন, যুক্তরাজ্য, চীনসহ অনেক দেশই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

তথ্য মতে, বিশ্বের যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলারের নিচে সেসব দেশ এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাবে। যেহেতু বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি সুতরাং বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যেই পেয়ে যাবে। ভ্যাকসিন দেশে এলে দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে ক্রমান্বয়ে বিতরণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া ও বিতরণের জন্যও সরকার যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

জুম মিটিং অনলাইনে যুক্ত হয়ে সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনো ধরণের সমন্বয়হীনতা নেই। আমরা সবাই এখন একযোগে দেশ সেবার কাজ করে যাচ্ছি।

বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, দেশে বর্তমানে করোনা টেস্টের পরিমাণ কমে গেছে। করোনা মোকাবেলা করতে পরীক্ষা সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। দেশে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতি করছে বলেও তিনি জানান।

স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেলান বলেন, কভিড হাসপাতালে অনেক সংখ্যক বেড খালি পড়ে রয়েছে। রোগীরা কেন ভর্তি হচ্ছে না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।

কমিটির সদস্য সচিব মীরজাদি সাব্রিনা ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে পরিবার থেকে আলাদা করে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা গেলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এতে কম আক্রান্ত হবেন।

বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহীউদ্দিন সিএমএসডি’র পরিচালক ও অন্যান্য মহাপরিচালক পদে কোনো চিকিৎসক কর্মকর্তা রাখা প্রসঙ্গে তার মতামত ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা আরো শক্ত অবস্থান থাকবে বলে তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য ও নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোাপাল দত্ত বলেন, হাসপাতালগুলোতে নন-কোভিড রোগীদের সেবা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রশাসন বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, স্কাউটস ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে শক্তিশালী টিম গঠন করতে হবে।

সভায় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন। টেস্ট সংখ্যা বৃদ্ধি করা, বিমান বন্দরে কাস্টমসে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে শুল্ক ব্যবস্থা শিথিল করা, স্বাস্থ্য অধিদফতরে একজন জরুরি ফোকাল পয়েন্ট রাখা এবং সিএমএইচডি’তে জরুরি কাজের সহজ ম্যাকানিজম তৈরির ব্যাপারে পরামর্শ দেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here