এবারের ঈদযাত্রা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো হবে : ওবায়দুল কাদের

0
530

খবর ৭১ঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রস্তুতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে ৪টি আন্ডার পাসের কাজ শেষ হবে ঈদের আগেই। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে।

দুই মাস ১৬ দিন পর আজ রবিবার সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পবিষয়ক এক সভা করেন মন্ত্রী।
নিজের চিকিৎসার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৬ জুলাই চেকআপ করাতে যাবো। ভারি কাজ করতে চিকিৎসরা নিষেধ করেছেন। দুইমাস পরপর চেকআপ করাতে হবে। তিনি বলেন, আগের মতো রাস্তায় রাস্তায় রোদ-বৃষ্টি একাকার করে কাজ করতে পারবো না। তবে ধীরে ধীরে ২/৪ মাস পর আগের মতো সুস্থ হয়ে উঠবো, ইনশাল্লাহ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশাল্লাহ, এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলবো। দ্বিতীয় ইনিংসের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- সড়কে ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আশা করি তা আনতে পারবো।

তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গা দুটি রুট। একটা হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুর-টাঙ্গাইল উত্তরাঞ্চলের। এখানে সংকটটা হয়, এখানে যানজট হয়। মানুষের দুর্ভোগ হয়। ঘরমুখী যাত্রীরা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে বাড়ি যান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামেও সমস্যা হয় মূলত তিনটি ব্রিজের কারণে। আমার অনুপস্থিতিতে কাঁচপুর ব্রিজের শুভ উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করেছেন। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে। এরপর ঢাকা-চট্টগ্রাম ঈদের সময় যে দুর্ভোগ-ভোগান্তি এইগুলো কমে যাবে। সম্পূর্ণ সহনীয় মাত্রায় থাকবে-এটা আমরা বলতে পারি। আমাদের গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল অংশে এখানেও ভোগান্তি কম হবে।

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, শরীরের কথা ভেবে আমি প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না হলেও কাজের অগ্রগতি থেমে থাকবে না। আমার এখানে একটা টিমওয়ার্ক আছে। আমার পার্টিতেও একটা টিমওয়ার্ক আছে।

ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, রাজপথে জনগণের ভোগান্তি কমাতে চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে বিআরটিসির পণ্য পরিবহনে কেনা ৫শ’টি পরিবহনের ৪৮০টি চলে এসেছে। অন্যদিকে ৬শ’টি বাসের মধ্যে ১৬৯টি এসেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন থেকে ২ মাস ১৬ দিন আগে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারপর দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলাম। হয়তো সারাজীবনের জন্যই অনুপস্থিত ছিলাম! কিন্তু দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের অশেষ দোয়া ও প্রধানমন্ত্রীর সবিশেষ চেষ্টায় আমি ফিরে এসেছি।

নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতেও আপনারা কাজে কোনো ঘাটতি তৈরি করেননি। এটা আমি সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায়ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে শুনেছি। তিনি আমায় বলেছেন, তোমার মন্ত্রণালয় ঠিকঠাক মতো চলেছে।

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার ২ মাস ১১ দিন পর দেশে ফেরেন ওবায়দুল কাদের। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে বহনকারী বিজি-০৮৫ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বাইপাস সার্জারির পর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে ওবায়দুল কাদের গত ৫ এপ্রিল ছাড়পত্র পান। তিনি হাসপাতালের কাছেই একটি ভাড়া বাসায় ছিলেন।

২০ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়। গত ৩ মার্চ সকালে বুকের ব্যথা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। পরে উপমহাদেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ মার্চ তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়। ওই রাতেই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ডা. ফিলিপ কোহ’র নেতৃত্বে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। পরে গত ২০ মার্চ ওই হাসপাতালে তার বাইপাস সার্জারি করেন মেডিকেল বোর্ডের সিনিয়র সদস্য কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. সিবাস্টিন কুমার সামি। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ২৬ মার্চ ওবায়দুল কাদেরকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here