চট্টগ্রামে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত দিবস উদযাপন

0
368

খবর৭১ঃযানজট মুক্ত নগরি প্রতিষ্ঠায় সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত রাখা, গণপরিবহনে আধুনিকায়ন ও নগরে বিআরটিসি বাস চালুর দাবি
পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে যানজট মুক্ত রাখা, সুস্থ সুন্দর নগরী প্রতিষ্ঠায় সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত রাখা হয়। সরকার যানজট ও সরকারী ব্যয় কমাতে সরকারী ছুটি দুই দিন করলেও যানজট ও সরকারি ব্যয় কমেনি। তার মূল কারণ পুরো সড়ক জুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ীর আধিক্য এবং গণপপরিবহনের বেহাল দশা। লক্কর-ঝক্কার বাসগুলির কারনে গণপরিবহনে যাতায়ত করা কঠিন। অন্যদিকে বাস শ্রমিক ও মালিকদের স্বেচ্ছাচারী ও অমানবিক আচরণের কারনে যাত্রী বিশেষ করে নারী যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতিনিয়তই বাস শ্রমিক ও মালিকদের অমানবিক আচরনে সাধারন যাত্রীরা অসহায় ও জিম্মি। নারী যাত্রীরা প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানি ও নানা সহিংষতার শিকার হচ্ছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, কলকারখানা বিভিন্ন জায়গায় যাতায়তে ব্যক্তিগত গাড়ীর ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। ফলশ্রুতিতে যানজটে স্থবির পুরো নগরজীবন। ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম ঘন্টা যেমন নষ্ঠ হচ্ছে, তেমনি নির্ধারিত সময়ে মানুষ গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। এ অবস্থায় পৃথিবীর উন্নত দেশের আদলে সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত রাখা, গণপরিবহনগুলির আধুনিকায়ন, চট্টগ্রাম নগরীতে পর্যাপ্ত বিআরটিসির বাস চালু, যাত্রীদের প্রতি মানবিক আচরন ও মর্যদাপূর্ন ব্যবহার নিশ্চিত করতে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষন প্রদানের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং নগরীর রউফাবাদ বিহারী কলোনীস্থ চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে আইএসডিই বাংলাদেশ, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর এর উদ্যোগে কার ফ্রি এলায়েন্স বাংলাদেশ ও ইনস্টিটিউট অব ওয়েল বিং এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব গাড়ীমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক জানে আলম, স্কাউট চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, ক্যাব যুব গ্রুপের সদস্য সচিব নোমান উল্লাহ বাহার, আইএসডিই বাংলাদেশের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ক্যাব পাঁচলাইশের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ক্যাব বন্দরের আলমগীর বাদসা, ক্যাব সদস্য শাকিল আহম্মদ- মুন্না, রেশমী আক্তার, মুক্তা শেখ-মুক্তি, ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলাম, শাম্পা কে নাহার, ক্যাব যুব গ্রুপের সৈয়দ ইয়াসির সামিট প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন সড়ক পরিবহনে শৃংখলা আনতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করলেও যাত্রীদের স্বার্থ উপক্ষো করে পরিবহন মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলকে বিপথে যেতে বাধ্য করছে। কারন সড়ক পরিবহনে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলার কারনে রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্ম ঘন্টা নষ্ঠ হচ্ছে। যার বাৎসরিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ যানবাহনের গড় গতি দাড়াবে ঘন্টায় ৪ কিঃমি। যান্ত্রিক যানের আধিক্যের কারনে বায়ু দুষণ, শব্দ দূষণ, সময় অপচয়, খোলা জায়গার সংকট এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা যদি আমাদের নগর জীবনে হয় তাহলে আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ নগরী বির্নিমান, শুধু অসম্ভব নয় কল্পনা ছাড়া কিছু হবে না। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন শহরে বিআরটিসির বাস থাকলেও চট্টগ্রাম নগরীতে লক্কর যক্কর বাসের কারনে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এছাড়াও বৃহৎ শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির নিজস্ব বাস সার্ভিস না দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। ফলে যানজট প্রতিনিয়তই বাড়ছে। অন্যদিকে সকাল বেলায় অফিস ও গন্তব্যে যাত্রায় ও সন্ধ্যায় ফিরতে গণপরিবহনের বাসগুলিতে তীব্রসংকট তৈরী করে। যার ভোগান্তি চরমে, সেখানে যাত্রীদের জিম্মি করে বেশী ভাড়া আদায় যেরকম বাড়ছে, তেমনি যৌনহয়রানিসহ নানা ধরনের সহিংষতা ও বাড়ছে। তাই সাধারন জনগনসহ যাত্রীদের জন্য নিরাপদ চলাচল ও নগরী প্রতিষ্ঠায় গণপরিবহনের আধুনিকায়ন জরুরী। একই সাথে ব্যক্তিগত গাড়ী পরিহারে জনগনকে উদ্বুদ্ধকরণ করা প্রয়োজন। যানজটের ভয়াবহ দুর্বিসহ দুরাবস্থা থেকে বাঁচাতে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, সিটিকর্পোরেশনকে উদ্যোগ নেবার দাবি জানান।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here