পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাতের পিতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমান বলে দাবি করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করেন এনবিআরের এই কর্মকর্তা।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ড. মো. মতিউর রহমানের এ নামে কোনো ছেলে নেই। এছাড়া মতিউর রহমানের বাসাও ধানমন্ডিতে নয়। তার ছেলের নাম আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব আর মেয়ের নাম ফারহানা রহমান।
এ বিষয়ে মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ইফাত নামে আমার কোনো ছেলে নেই। এমনকি আত্মীয় বা পরিচিতও নন। আমার একমাত্র ছেলের নাম তৈাফিকুর রহমান। একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি এ বিষয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহায়তা চেয়ে আইনি পদক্ষেপে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করায় আমি বিব্রত। আমি অবশ্যই আইনি পদক্ষেপে যাব।
ভাইরাল ওই সব পোস্টে বলা হয়, ‘ধানমন্ডির ওই তরুণ’ ১৫ লাখ টাকার ছাগল ছাড়াও ৪টি গরু কিনেছেন। সব মিলিয়ে অর্ধকোটি টাকার কোরবানি দিচ্ছেন ইফাত। এসব পশু তিনি আলোচিত সাদিক এগ্রো থেকে কিনেছেন।
এদিকে, গণমাধ্যমকে সাদিক এগ্রো ফার্মের কর্ণধার মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন জানিয়েছেন, আলোচিত তরুণ শুধু এক লাখ টাকা দিয়ে ছাগলটি বুক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পুরো টাকা পরিশোধ করে ছাগলটিকে খামার থেকে বাড়িতে নিয়ে যাননি। পাশাপাশি ওই ছেলের বাবাও রাজস্ব কর্মকর্তা নন। তার বাবা বিদেশে থাকেন।
অন্যদিকে মুশফিকুর রহমান ইফাতের পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তিনি ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল লক করে রেখেছেন। ফলে ল্যান্ড ক্রুজার, হোন্ডা সিভিক, ক্রাউন মেজেন্টার মতো বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে নিয়ে নিয়মিত ছবি দেওয়া ওই তরুণের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্সে অনার্স-মাস্টার্স আর এমবিএ করা মতিউর রহমানের কর্মজীবন শুরু হয় পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ)। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত কাজ করেন সেখানে। সর্বশেষ উপ-ব্যবস্থাপক পদ থেকেই ১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল যোগ দেন কাস্টমস বিভাগে। ২০১৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে কমিশনার হন তিনি।
২০২১ সালের ১২ আগস্ট তাকে কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে সদস্য (টেকনিক্যাল) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত।