খবর৭১ঃ ত্বকের ঠিক নিচের শিরাগুলো যখন মোটা হয়ে ফুলে উঠে একেবেঁকে সর্পিলভাবে অগ্রসর হয়, তখন তাকে ভ্যারিকোস ভেইন বলা হয়। ভ্যারিকোস ভেইন মূলত পায়ে হলেও শরীরের অন্য স্থানেও হতে পারে।
এমনটি হলে মাঝে মাঝে শরীর বেশ চুলকায়। দেখতেও বিশ্রী। অনেক সময় অস্ত্রোপচার করা লাগে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবুল হাসান মুহম্মদ বাশার।
ত্বকের নিচে অবস্থিত পায়ের সবচেয়ে বড় শিরা- লং স্যাফানাস ভেইন (Long saphenous Vein) এবং এর উপশাখাগুলো এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। পায়ের পাতার উপরিভাগ এবং গোড়ালি ও পায়ের ভেতরের দিক থেকে শুরু হয়ে ওপরে উরুর ভেতরের দিকে এসব আঁকাবাঁকা শিরাগুলোর শাখাপ্রশাখা বিস্তৃত হয়। ‘শর্ট স্যাফানাস ভেইন’ (Short saphenous Vein) নামে পায়ের অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি শিরা ও তার উপশাখাগুলোও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এদের বিস্তৃতি মূলত হাঁটু ও পায়ের পেছন বা বাইরের দিকে।
ভ্যারিকোস ভেইনের উপসর্গ
ভ্যারিকোস ভেইন দৃষ্টিকটু একটা রোগ। সঙ্গত কারণেই এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বিশেষ করে মহিলারা তাদের আক্রান্ত পা নিয়ে বিব্রত বোধ করেন। প্রাথমিক অবস্থায় পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, পা ভারী বোধ হয় এবং হাঁটতে ক্লান্তি লাগে। পরবর্তী সময়ে পায়ের আক্রান্ত অংশ ফুলে যায়, অল্প আঘাতে ফুলে যাওয়া শিরা থেকে রক্তক্ষরণ হয়, শুকনো বোধ হয়, চুলকায় ও আক্রান্ত অংশের চামড়ার রং কালো হয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে আক্রান্ত অংশে ঘা হয়, যা সহজে শুকাতে চায় না বা শুকালেও আবার দেখা দেয়।
ভ্যারিকোস ভেইনের সম্ভাব্য জটিলতা
ভ্যারিকোস ভেইন থেকে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশংকা অপেক্ষাকৃত কম। ক্ষেত্রবিশেষে নিচের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে-
* আক্রান্ত শিরাগুলো থেকে বারবার রক্তক্ষরণ হতে পারে।
* সময়মতো চিকিৎসা না করালে ভ্যারিকোস ভেইন থেকে সৃষ্ট চুলকানি ও ত্বকের নিচে জমা হতে থাকা রক্তের লৌহজাত উপাদান থেকে ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
* আক্রান্ত শিরাগুলোর ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে কখনও কখনও হঠাৎ তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
* শিরার ভেতরে জমাট বাঁধা এ রক্ত ছুটে গিয়ে ফুসফুসে আটকাতে পারে, যার কারণে রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে যদিও এ আশংকা খুব কম।
* ভ্যারিকোস ভেইন থেকে সৃষ্ট ঘা ক্ষেত্রবিশেষে ক্যান্সারেও রূপ নিতে পারে।