সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

0
234

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিনকে নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে (মিডিয়া) অসত্য, বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে সৈয়দপুর পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টারে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোখছেদুল মোমিন ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সৈয়দপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পৌর সবজি মার্কেট পুনঃনির্মাণ কাজ করছে। আর সম্প্রতি সৈয়দপুর পৌর সবজিবাজার নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সেই সব ঘটনায় আমার কোন সম্পৃক্তা নেই। অথচ ওই সব ঘটনার সঙ্গে আমাকে অনাকাঙ্খিতভাবে জড়িয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য সংগঠনকে ব্যবহারের কোন চেষ্টা করিনি। কিন্তু ২/১টি সংবাদ মাধ্যমে (মিডিয়া) আমাকে নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূলতঃ বর্তমানে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানে অনেকটাই ঈষার্ণিত হয়ে একটি কুচক্রীমহল আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এমন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চাকরি’র সুবাদে প্রথমে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ি। আমার বাবা প্রয়াত সামশুল হকও রেলওয়ে শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। বর্তমানে আমি রেলওয়ে শ্রমিক লীগ সৈয়দপুর কারখানা সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছি। বিগত ২০১৯ সালে ২২ অক্টোবর সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আমি এককভাবে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু সভাপতি পদে সমঝোতা না হওয়া কমিটি গঠন ছাড়াই ওই সম্মেলন অনুষ্ঠান শেষ হয়। পরবর্তীতে অজ্ঞাত কারণে আমাকে বাদ দিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ওই কমিটির সভাপতি আখতার হোসেন বাদলের অকাল মৃত্যু হয়। সে সময় দলের কর্মকান্ড গতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আলাপ-আলোচনা ভিত্তিতে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারী আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন। এরপর থেকে আমি ওই পদে থেকে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছি। এছাড়াও আমি জাতীয় শ্রমিক লীগ সৈয়দপুর আ লিক শাখার যুগ্ম আহবায়ক পদে দীর্ঘ ১৭ বছর এবং রেলওয়ে শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্টের নির্বাচিত শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে ১৬ বছর দায়িত্বে ছিলাম। আমি আওয়ামী লীগসহ উল্লিখত সংগঠনগুলোর ওই পদসমূহে একদিনে আসিনি। আমি দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। অথচ আমাকে নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আমার চাকরির পদপদবি নিয়ে নানা রকম কটূক্তি করা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমি নাকি রেলওয়ে কারখানার খালাসি পদ থেকে সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছি। কিন্তু কখনও খালাসি পদে ছিলাম না। আমি মূলতঃ ১৯৭৭ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ট্রেড এ্যাপ্রেন্টিস (শিক্ষানবিশ) পদে যোগদান করি। বিগত ২০১৭ সালে সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জাওয়াদুল হক সরকার মৃত্যুবরণ করলে আমি উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করি। সে সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আমাকে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেন। আমি রেলওয়ে কারখানার চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করে উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের বিপুল ভোটে প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। পরবর্তীতে এলাকার জনগণ আমাকে আবারও উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসিয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে রেলওয়ের জমি দখলের আনিত অভিযোগকে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে তিনি বলেন, আমার ও আমার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের নামে রেলওয়ের যে জমি বরাদ্দ রয়েছে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরাদ্দ নিয়ে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছি।
মোখছেদুল মোমিন বলেন, সৈয়দপুরসহ নীলফামারীর জেলায় কর্মরত সংবাদিকদের সঙ্গেও আমার কোন দ্বন্দ্ব কিংবা বিরোধ নেই। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে নানা রকম বক্তৃতা দিয়ে থাকি। এমনি শহরে এক পথসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে মনের ক্ষোভে কিংবা দুঃখে এক সাংবাদিক সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু কথা বলেছি। তিনি এ জন্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। আর শহরে এক সাংবাদিকের গলায় জুতার মালা পড়ানো বিলবোর্ড লাগানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান তিনি। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস আলী, উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন, পৌর প্যানেল মেয়র শাহিন হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ও পৌর কাউন্সিল কাজী জাহানারা বেগম, বাঙ্গালীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা: শাহাজাদা সরকার, উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর জোবায়দুর রহমান শাহীন, পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম রয়েল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আব্দুল মমিন সরকার, বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রভাষক আব্দুল হাফিজ হাপ্পু, উপজেলা যুব লীগের যুগ্ম-আহবায়ক আসাদুল ইসলাম আসাদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম টিটো, পৌর ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক সিফাত সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here