পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম হলে কী করবেন?

0
288

খবর৭১ঃ নারীদেহের একটি জটিল রোগ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম। হরমোনের তারতম্যের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। রোগটির মূল উপসর্গ হিসেবে নারীর ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি, বিভিন্ন আকারের ও বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট দেখা দেয়। এর ফলে অনিয়মিত মাসিক, সন্তান ধারণে সমস্যাসহ নানা জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ এবং এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম হচ্ছে নারীদেহে এন্ড্রোজেনের (পুরুষ যৌন হরমোন) আধিক্যের কারণে সংঘটিত শারীরিক সমস্যা। এর প্রভাবে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। যেমন- ক. অনিয়মিত মাসিক খ. অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ. মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ. ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে।

আরও কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে- তলপেটে ব্যথা, মকমলের মতো কালো ত্বক (ঘাড়, বগল ইত্যাদি জায়গায়), বন্ধ্যত্ব। রোগীদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এদের অনেকেই দৈহিক স্থূ’লতায় আক্রান্ত হয়, নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া, মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।

জিনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি এ রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয়।

যার পেছনে পিটুইটারি গ্রন্থি কর্তৃক অতিরিক্ত এলএইচ নিঃস্বরণ ও দেহে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতিই কারণ।

রোগ শনাক্তকরণ

নিম্নের উপসর্গ দেখা দিলে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম হিসেবে রোগটিকে চিহ্নিত করবেন

* অনিয়মিত ঋতুস্রাব।

* নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতি।

* ডিম্বাশয়ে সিস্ট।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

* সিরাম টেস্টোস্টেরন, এলিস, এফএসএইচ।

* পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম।

* ওজিটিটি।

চিকিৎসা

জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা : চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে। রোগীর দৈহিক ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছতে সাহায্য করবে, বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে।

এ রোগীদের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে, শাকসবজি (আলু বাদে), রঙিন ফল-মূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে।

দৈহিক ওজন বা বিএমআই বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here