শৈত্যপ্রবাহে নতুন বছর শুরু, বিপর্যস্ত জনজীবন

0
220

খবর৭১ঃ পৌষের মাঝামাঝি থেকে উত্তরাঞ্চজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। মধ্যরাত থেকে ভোরপর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর হিমবাতাস থাকায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। বছরের প্রথম দিনটিও শৈত্যপ্রবাহ দিয়ে শুরু হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে রংপুর বিভাগে এমন শৈত্যপ্রবাহ থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কামাল মল্লিক জানান, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামসহ উত্তরের কিছু জায়গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এই শৈত্যপ্রবাহ রংপুর বিভাগে আরও বেশ কিছুদিন চলবে। তাছাড়া সারাদেশের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করবে।

গতকাল শুক্রবার তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

বড় এলাকা জুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এলে মৃদু; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।

বাংলাদেশে শীতের দাপট মূলত চলে জানুয়ারি মাসজুড়ে। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল।

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া সাধারণ শুষ্ক থাকবে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং উত্তরাঞ্চলে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিক ধেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে কয়েকদিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহের কারণে উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঠাণ্ডার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জবুথবু অবস্থা এই অঞ্চলের মানুষের। শ্রমজীবী ও নদী পারের মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। অঞ্চলের ঘন কুয়াশার কারণে আলুর আবাদ নিয়ে চাষিরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

ঘর থেকে বেরোতে না পারায় পঞ্চগড় জেলার হাজার হাজার দিনমজুরের পরিবার মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। শীত-কুয়াশার দাপটে দিনের বেলাও হাট-বাজার, রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা থাকে। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অসহায় মানুষ। বেশি কষ্টে আছেন হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপও।

কুড়িগ্রামে কিছুদিন ধরেই দাপট দেখাচ্ছে শীত। ঠান্ডার ভয়ে যেমন কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, তেমনি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ফেরিওয়ালারা। বয়স্ক ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা রোগে। এ উপজেলায় দুপুরের পর থেকেই শীতের মাত্রা বেড়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হয় তীব্র ঠান্ডা। সন্ধ্যা হলেই সড়ক-বাজারে মানুষের চলাচল কমে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here