সৈয়দপুরে অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর

0
292

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর :
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ব্যতিক্রমধর্মী পন্থায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছে অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর। লকডাউনের কারণে অসহায় পরিবারের মাঝে রাতের আঁধারে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ওই খাদ্য সামগ্রীর তুলে দিচ্ছে সংগঠনের সদস্যরা। বিতরণ করা এসব খাদ্য সহায়তার মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, আটা, তেল ও আলু।
সংগঠনটির ব্যতিক্রমী এমন কর্মসুচির বিষয়ে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশের মত সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন এ উপজেলায় অব্যাবহভাবে চলছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন দিন আনে দিন খায় এমন খেটে খাওয়া,নিম্ন ও মধ্যবিত্ত্ব পরিবারগুলো। বেশি সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্ত্ব পরিবারের লোকজন। তারা লোক লজ্জায় কারো কাছে না পারেন না। তাই সৈয়দপুরের জনপ্রিয় অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর ব্যতিক্রমধর্মী পন্থায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত্বদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছে। লকডাউনের শুরু থেকেই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা নওশাদ আনসারী, আজিম, সাজু, সামিউল, রাজা, শাহবাজ, জয়, শাহজাদা, জীবন, ইমরান, সাকিবসহ অন্যান্যরা পরিস্থিতির শিকার এসব অসহায় পরিবারকে রাতের আঁধারে খাদ্য সহায়তার প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছেন। সংগঠনের অসংখ্য সদস্যের মাঝে খাদ্য সহায়তা নিয়ে কাজ করছেন ১১ জন সদস্য। তারা দিনের বেলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত্বদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। আর খাদ্য সহায়তা বিতরেণর জন্য বের হন আঁধারে। তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট। আর ওইসব প্যাকেট নিয়ে অসহায় পরিবারগুলোর দরজায় হাজির হন। বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যরা বের হওয়া মাত্রই তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় খাদ্য সামগ্রীর ওইসব প্যাকেট। গতকাল শনিবার রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংগঠনের সদস্যরা সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট এলাকায় বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরছেন। তাদের প্রত্যেকের হাতে খাদ্য সামগ্রী ভর্তি এক একটি প্যাকেট। লোক লজ্জার ভয়ে চাইতে পারেন না এমন পরিবারের খোঁজ করে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে খাদ্যসামগ্রী পাকেট (ব্যাগ)। আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর সংগঠনের খাদ্য সামগ্রী সহায়তা পাওয়া শাকিল নামে এক ব্যক্তি। বলেন, স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ছোট সংসার। হকারী করি আমি। কিন্তু লকডাউনে সব বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। কোন কিছু চাইতেও পারছিলাম না কারো কাছে। ভাবতেও পারিনি রাতে ঘুম থেকে তুলে কেউ খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের প্রিয় সৈয়দপুরের সকলকে ভাল রাখুক বলে দোয়া করেন। সংগঠনের আজিম, সামিউল, রাজাসহ অন্যানরা জানান, আমরা মূলত রাতে বের হই। লকডাউন পরিস্থিতিতে যারা আয় রোজগার করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তাদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। তারা বলেন সৈয়দপুরের মধ্যে গোলাহাটে বেশি অভাবী মানুষ তাই এই এলাকাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। জানতে চাইলে আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর’র প্রতিষ্ঠাতা নওশাদ আনসারী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মানতে গিয়ে সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তাঁরা যেন খাদ্য সঙ্কটে না পড়েন, সে জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। আমাদের কার্যক্রমে যাতে প্রকৃত অসহায় মানুষজনের হাতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছায় সেটা মাথায় রেখে এ কাজ করা হচ্ছে। গত ঈদুল আজহার আগে ও পরে জারিকৃত লকডাউনে এ পর্যন্ত আমরা রাতে বের হয়ে পরিস্থিতির শিকার এরূপ প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। এই কার্যক্রম লকডাউন থাকাকালীন পর্যন্ত চলবে বলে জানান তিনি। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. রমিজ আলম বলেন, আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর সংগঠনটি নীরবে নিভৃতে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে আমরা লক্ষ্য করেছি। খাদ্য সহায়তার যে প্রকৃত হকদার তাদের বাসায় গিয়ে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছে তারা। এরূপ কার্যক্রমে আমাদের প্রিয় সৈয়দপুর এর সকল সদস্যদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here