করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ১৬ মাস

0
357

খবর৭১ঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এবার সেশনজটের ধকল পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। প্রায় ১৬ মাস বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা হয়নি। এসএসসি-এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাগুলো শুধু বন্ধই নয়, একটির পেছনে আরেকটি হাজির হওয়ার পথে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষাগুলোর তারিখ পুনর্নির্ধারণও করা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ এগুলো নেওয়া যাবে সেটাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) উপ-পরিচালক কেএম এনামুল হক বলেন, করোনার দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষার কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পরিমাপ করে বোঝানো যাবে না। পরীক্ষাগুলো আটকে আছে। ঠিকমতো শ্রেণি কাজ হয়নি।

যদিও সরকারি লোকজনের কথায় মনে হতে পারে অনলাইনে শতভাগ শিক্ষা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। করোনায় শিক্ষার ক্ষতি পূরণে সরকার ইতোমধ্যে ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্ল্যান’ নামে একটি দলিল তৈরি করেছে। এর আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী শিখন ঘাটতি পূরণে কাজ করতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট সৃষ্টি হয়ে থাকে। আগের বছরের পরীক্ষা না হওয়ায় পরের বছরের পরীক্ষা আটকে যায়। এভাবে চলতে চলতে সৃষ্টি হয় সেশনজট। করোনার কারণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবার স্কুল-কলেজে।

চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল যথাক্রমে ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে। মহামারির ডামাডোলে সেই পরীক্ষা এখন পর্যন্ত হয়নি। যথাসময়ে পরীক্ষা দুটি নেওয়া গেলে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা এখন কলেজে ক্লাস করত। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষায়। অন্যদিকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে উল্লিখিত দুই পরীক্ষার কাজ শেষ না করলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে এ পরীক্ষা দুটি পিছিয়ে যাবে।

সে ক্ষেত্রে এ দুই স্তরে সেশনজট আরও দীর্ঘায়িত হবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, পরিস্থিতিই আমাদের অপেক্ষায় থাকতে বাধ্য করছে। তবে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি আছে। এইচএসসিও নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থার কারণে স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে সমস্যা হচ্ছে, পরীক্ষা কবে নাগাদ নেওয়া যাবে সেটিরই নিশ্চয়তা নেই। এখন পর্যন্ত সরকারের চিন্তা হলো, ‘কাস্টমাইজড’ সিলেবাসের ভিত্তিতে ক্লাস শেষে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে বিকল্প পন্থা নেওয়া হতে পারে। সেটি হচ্ছে, সিলেবাসের ওপর মূল্যায়ন করা। যেহেতু আগামী ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি এসএসসি পরীক্ষা নিতে হবে তাই ডিসেম্বরের মধ্যে এবারের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার কাজ শেষ করতে হবে। শিগগিরই বিকল্প পন্থা অবহিত করার লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে আসবেন।

শিক্ষা বিশ্লেষকরা জানান, বিদ্যমান ছাত্রছাত্রীদের সেশন পেছালেও তাদের কম-বেশি লেখাপড়া চলছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে প্রাক-প্রাথমিক বা প্লে, নার্সারি ও কেজি বা শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। এ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা স্তর চালু করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here