খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক: ফখরুল

0
365

খবর ৭১: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ চার বছর কারাগারে আটক রাখার কারণে করোনা থেকে মুক্ত হলেও অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর হার্ট, কিডনি, লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ডায়াবেটিস আছে। সবগুলো মিলিয়ে তিনি অনেক অসুস্থ আছেন। আপনারা জানেন, তাঁর পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছিল যে, তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক। এ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে সেই সুযোগ যেকে বঞ্চিত করেছে। সরকারকে আহ্বান জানাব, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে এ নেত্রীকে, যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই নেত্রীকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক। তাঁকে মুক্তি দেওয়া হোক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বেরাইদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সড়কের পাশে যে বড় বড় গাছ ছিল, সব ধ্বংস করেছে। আপনারা দেখতে পারেন। জেলা পরিষদের যত গাছ ছিল, সব নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ প্রকৃতিকে ধ্বংস করেছে, পরিবেশ ধ্বংস করেছে, রাজনৈতিক পরিবেশও ধ্বংস করেছে। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের মানুষকে তারা চরম বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আমাকে তো বলতে হয় না, আপনারা নিজেরাই সব দেখেন, পত্রিকায়ও দেখেন।

‘এই যে তুরাগ নদ, সব দখল হয়ে যাচ্ছে। কারা দখল করছে? খোঁজ নিয়ে দেখুন সব আওয়ামী লীগের নেতারা দখল করছে। কারা সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে? পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে কার? আওয়ামী লীগের এমপির। এরপর ক্লাব তৈরি হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয়ে। রূপগঞ্জের দিকে যদি যান, দেখবেন আওয়ামী লীগের নেতা, এমপি-মন্ত্রীরা সব দখল করে ফেলেছে। এসব দখল করে একটা বিরূপ প্রকৃতি তৈরি করছে’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কোভিড নিয়েও তারা ব্যবসা করছে। মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিবেশ উন্নয়নের জন্য এ সরকার কত শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে আপনারা কি বলতে পারবেন? খুব সামান্য। অথচ এ পরিবেশের জন্য আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অনেক বেশি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সব উপকূলবর্তী এলাকায় গাছ লাগানোর জন্য লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। আমরা নতুন করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারা দেশে বৃক্ষায়ন কর্মসূচি শুরু করেছি। এটাকে আমরা একটা সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে চাই।

খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি খুব প্রিয় মানুষ। কারণ, তিনি একজন গৃহবধূ ছিলেন। যখন এ দেশের মানুষের প্রয়োজন ছিল, তখন তিনি সড়কে বেরিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন, কারাগারে গেছেন। যুদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার কতটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দল, যে মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে সেখানে তাঁর কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা বলছে দুই কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। মূলত একটা পয়সাও তছরুপ হয়নি। দুই কোটি ৩৪ লাখ টাকা এখন আট কোটির ওপরে ব্যাংকে জমা হয়ে আছে। মিথ্যা একটা মামলা দিয়ে তাঁকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আর এখন আওয়ামী লীগের নেতারা-মন্ত্রীরা হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। গত পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহ-পরিবেশ ও বন সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক জি এম শামসুল হক, তুহিরুল ইসলাম তুহিন, দপ্তর সম্পাদক এ বি এম এ রাজ্জাক প্রমুখ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here