মোঃ আবু সাঈদ, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ যমুনা নদী ভাঙ্গনে কয়েক বছরের ব্যবধানে অনেক বাড়ি ঘর, গাছ পালা, কবরস্থান, বিলিন হয়েছে। জন্মস্থান ছাড়া হয়েছে শত শত সাধারণ মানুষ । বর্তমানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, পাকা রাস্তা, ঐ গ্রামের বাকি অংশ হুমকির মুখে, আষাড় শ্রাবন মাস এলে রাতে ঘুমাতে পারে না তারা, সব সময় মনে হয় কখন জানি রাক্ষসি নদী এসে আমার স্বপ্নোটি বিলিন করে নিয়ে যায়। এমন আতংকে প্রতিটি মুহুত্ত কাটে তাদের।
সরেজমনি দিনাজপুর জেলার প্রথম শ্রেণীর বিরামপুর পৌরসভা আর এই পৌরসভার ৯ নং ওর্য়াড ভবানীপুর মুন্সিপাড়া ঘুরে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রোস্থ গ্রামবাসীদের সাথে কথা বললে ঐ গ্রামের আফজাল হোসেন, আব্দুল গনি মুন্সি, সোলাইমান হোসেন, আজগর আলী জানান, সাবেক নদীটি আরো কয়েক বিঘা দূরে ছিল চোখের সামনে প্রতি বছর ভাংতে ভাংতে আজ এখানে এসে ঘর বাড়ি ভেঙ্গে নদী হয়ে আছে। দীর্ঘ দিন যাবত পানির ছোবলে কঠিন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। এরই মধ্যে চোখের সামনে বিলিন হয়েছে ফসোলী জমি, গাছ পালা, কবরস্থান, যদিও বা বর্তমানে শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি কম আছে সামনের বর্ষাকে ঘিরে চিন্তা গ্রস্থ হয়ে সব সময় চলতে হয় আমাদের কারণ আমরা দিন খেটে দিন খাই আর রাতে এসে একটু ঘুমাই এই বসত বাড়ি টুকুই আমাদের সম্বল। কেননা একের পর এক বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের আঘাতে ইতি পূর্বে শত শত বিঘা জমি হারিয়ে গেছে নদী গর্ভে। আর নদী গর্ভটি যেন হয়েছে ফসলী জমি, বেশ কিছু বাড়ী-ঘর সহ একটি মসজিদও ক্ষতিগ্রস্থের দ্বারপ্রান্তে। ইতি পূর্বে অনেক প্রশাসন, রাজনিতিবিদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক জন এসেছে দেখে শুনে গেছে কিন্তু বড় ধরণের কোন কাজ হয় নায়। বর্ষা মৌসুমের আগেই দ্রæত সমস্যা সমাধানের জোরালো দাবী গ্রামবাসীর।
তারা আরো জানান,আমরা এবার মাননিয় প্রধান মন্ত্রি জন নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরুধ জানায় তিনি যেন আমাদের দূর্দশার কথা চিন্তা করে সাবেক নদী যেখানে ছিল সেখানে মাপ জোক করে খনন করে দিলে আমরা চির কৃতঙ্গ থাকব মসজিদ, স্কুল, পাকা রাস্তা এবং এই আমাদের প্রিয় মাতৃ ভুমি জন্ম স্থান গ্রামটিও রক্ষা পাবে।
তবে সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে সেটি দেখতে ছুটে যান বিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম রাজু চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাঙ্গন রোধ কল্পে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি হোক বা স্বেচ্ছা শ্রমেই হোক, সেখানে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানি প্রবাহের গতি পথ পরিবর্তন করে হলেও এর দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিরামপুর পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র আক্কাস আলী নির্বাচিত হওয়ার পর সেখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের পার্শে দাড়িয়ে তাদের সমস্যার কথা শুনার পর বললে , নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের বিষয়গুলো অত্যন্ত দুঃখজনক যা মেনে নেয়া যায় না কারণ সেখানে অনেক শ্রেণী পেশার লোকজন বসবাস করে থাকে আবার তাদের অনেক স্বপ্নও থেকে যায় যা নদী এক নিমিশেয় শেষ করে ফেলে।
মেয়র আক্কাস আলী সাংবাদিকদের জানান, সহায়-সম্পদ রক্ষাসহ মানুষের জীবন মান উন্নয়নের সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে যোগাযোগ করা হচ্ছে। জরুরি ভাবে এটি সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ইতিমধ্য নদীর ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি দ্রæত সমাধানে বর্ষা মৌসুমের আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।