সর্বত্র স্বাস্থ্য বিধি উধাও মার্কেটগুলো জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

0
285

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে:   চলমান লকডাউনে স্থবির মার্কেট খুলে দিতেই সৈয়দপুর শহরের সব মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ। মানুষের স্রোতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট থাকছে সর্বক্ষন। বেলা বাড়ার সঙ্গে এ চিত্র আরো ভয়ানক হয়ে উঠেছে। ঈদের কেনাকাটায় সব মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব উধাও হয়ে গেছে। শহরের সব কাপড় মার্কেট, তৈরী পোশাকের দোকান, পাদুকা ও প্রসাধন দোকানে গাদাগাদি করে পছন্দের পণ্য কিনেছেন ক্রেতারা। আজ বুধবার শহরের নিউ ক্লথ মার্কেট, সৈয়দপুর সুপার মার্কেট,পুরাতন কাপড় মার্কেট, শিল্প সাহিত্য সংসদ মার্কেট, সৈয়দপুর প্লাজা শপিং মল ও শহীদ ডাঃ শামসুল হক সড়কের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, সব দোকানে নারী-পুরুষ-শিশুদের ভীড়। দুপুরের দিকে এ ভীড় আরো বাড়তে থাকে। কেনা কাটায় এখন প্রাধান্য পাচ্ছে তৈরী পোশাক, শাড়ী, মেয়েদের থ্রিপিস, ছেলেদের পাঞ্জাবী, প্যান্ট, শার্ট, ফতুয়া কেনাকাটার প্রতিযোগিতা। চলমান মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতীয় বা বিদেশী পোশাক ও কাপড়ের তেমন আমদানী না থাকায় ক্রেতারা দেশী পোশাক কিনতে ঝুঁকে পড়েছেন। দোকানীরা মাস্ক ক্রেতাদের মাস্ক পড়তে অনুরোধ করলেও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের মাঝে দেখা যাচ্ছে মাস্ক পরার উদাসীনতা। ভীড় ঠেলে পছন্দের বাহারী পোশাক কিনতে ক্রেতারা পরিবারের সদস্য নিয়ে ছুটছেন এ মার্কেট থেকে ও মার্কেটে। নিউ ক্লথ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী থ্যাংকস ক্লথ স্টোর-২এর মালিক মো. একরামুল হক বলেন, মার্কেট বন্ধ থাকায় আমরা অসহায় অবস্থায় ছিলাম। সামনে ঈদ, মানুষ কেনাকাটা করতে আসছে। ক্রেতাদের পছন্দকে সামনে রেখে বাহারী কাপড় দোকানে তোলা হয়েছে। তার দোকানে শাড়ী, পাঞ্জাবী, ফতুয়া শার্ট, থ্রি-পিসসহ ঈদের বিশেষ কালেকশন রয়েছে। এবার দেশী ব্রান্ডের পোশাকই ঈদ বাজার দখল করে আছে। ক্রেতারাও দেশী পোশাকই কিনছেন। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে বলেন আমরা ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে চেষ্টা করছি। কিন্তু ক্রেতাদের পক্ষ থেকে মানাতে অনীহা দেখা যায়। সৈয়দপুর সুপার মার্কেটের আহমদ ক্লথ স্টোরের মালিক আহমেদ হোসেন, সাজু ক্লথ স্টোরের মালিক সাজু, মোহাম্মাদী ক্লথ স্টোরের মালিক রাজুসহ অনেকেই জানান, ক্রেতারা তাদের প্রতিষ্ঠানে আসামাত্রই তাদেরকে মাস্ক পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। শহীদ ডা. শামসুল হক সড়কে ঢাকা ফ্যাশনের মালিক নাজমুল হোসাইন মিলন বলেন, আমাদের ফ্যাশন হাউস পাঞ্জাবীর জন্য খ্যাত। এবারও নামীদামী দেশী ব্রান্ডের নজরকাড়া পাঞ্জাবী পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের আগমন ভালো। পাঞ্জাবীর পাশাপাশি মেয়েদের বাহারী থ্রি-পিছ, ছেলের শার্ট-প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে ভালো। দাম সম্পর্কে বললেন কাপড়ের দাম তেমন বাড়েনি। সব পোশাকের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে বেচাবিক্রির চেষ্টা করছি। কিন্তু করোনা সংক্রমন নিয়ে ক্রেতারা মোটেই সচেতন নয়। গাদাগাদি করে দোকানে ঢুকে পড়ছেন ক্রেতারা। শহরের নতুন বাবুপাড়া থেকে কেনাকাটা করতে এসেছেন চাকুরীজীবী কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে পাঞ্জাবী ও থ্রি-পিস কিনতে এসেছি। করোনার ঝুঁকি আছে কিন্তু সামনে ঈদ তাই পোশাক তো কিনতে হবে। এছাড়াও মার্কেট গুলোর পাশাপাশি সড়কের পাশে পসরা সাজিয়ে বসেছে হকার। এসব দোকানেও ভীড় করে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের আগমন চোখে পড়ার মত নয়। তবে চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী ও স্বচ্ছল পরিবারের আগমনই রেখে পড়ে বেশী। ক্রেতাদের আগমন দেখে মনে হয় মহামারী করোনাকালেও মানুষের মাঝে কেনাকাটায় ভাটা পড়েনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here