সিলগালা করা হয়েছে বিজিএমইএ ভবন

0
476

খবরঃ দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে রাজধানীর হাতিরঝিলের সৌন্দর্য্যের বিষফোঁড়া হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাকশিল্প প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি’র (বিজিএমইএ) প্রধান কার্যালয় বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিলগালা করে দেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। প্রত্যেক ফ্লোরে ফ্লোরে এবং ভবনের মূল ফটকে তালা দেয়া হয়। তালা দেয়ার পর চাবি হস্তান্তর করা হয় পুলিশের কাছে।

ভবনটি অপসারণের অংশ হিসেবে এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিসের মালামাল সরিয়ে নিতে ৪ দফায় সময় বেঁধে দেয় রাজউক। প্রথম দফায় তাদের দুপুর ১২টার মধ্যে মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়। এরপর আরেক দফা সময় বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় সময় দিয়ে ৫টার মধ্যে অফিস খালি করতে বলা হয়। এরমধ্যেও সব মালামাল সরাতে না পারায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

এর আগে সকালে ভবন ভাঙার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে হাতিরঝিলে উপস্থিত হোন রাজউক’র পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার ওলিউর রহমান, হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌসসহ রাজউকের কর্মকর্তারা। ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৬ সালের অক্টোবরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভবনটির উদ্বোধন করেন। এরপর থেকেই সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে হাতিরঝিলের মধ্যে অবস্থিত ভবনটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

কিন্তু জমির মালিকানা না থাকা ও জলাধার আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভবনটি ভেঙে ফেলার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ের কপি পাওয়ার পর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল আবেদন করেন বিজিএমইএ। শুনানি শেষে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন খারিজ হওয়ায় রাজধানীর বহুল আলোচিত এই ভবন ভাঙার বিষয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়।

২০১৬ সালের নভেম্বরে ভবন ভাঙার নির্দেশ দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রিভিও আবেদন করেও কাজ না হলে মুচলেকা দিয়ে গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত এই ভবনে থাকার অনুমতি নেয় বিজিএমইএ। ভবনটি ভাঙতে বিজিএমইএ’কে দেয়া সময় পার হয়ে যাওয়ার পরই এই ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করে।

ভবনটি সরাতে একাধিকবার সময় নেয় বিজিএমইএ। পরে ৫০ শতাংশ কমমূল্যে উত্তরার ১৭ নং সেক্টরে ১১০ কাঠা জমির ওপর ১৩ তলা ভবন নির্মিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে নতুন এই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৬ তলার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ভবনটির পুরো কাজ শেষ হতে পারে ২০২০ সালের জুনে। তবে কয়েকটি তলার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় ও আদালতের বাধ্যবাধকতা থাকায় চলতি মাসেই বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় উত্তরায় স্থানান্তর করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here