মৃত্যুঞ্জয়ি শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী

0
1014
মৃত্যুঞ্জয়ি শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী

খবর৭১ঃ

১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশরা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ক্ষুদিরামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তার মৃত্যুই ছিল পুরো উপ মহাদেশের মুক্তির প্রেরণা বছর পালিত হলো স্বাধীনতা সংগ্রামী শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী

জেনে নেই শহিদ ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে কিছু তথ্য:

ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর মেদেনীপুর জেলার কেশপুর থানর মৌবনী গ্রামে। বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু মা লক্ষ্মীপ্রিয় দেবী।

তিন মেয়ের পর তিনি মায়ের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলে অকালে মারা যায়। অপর ছেলের মৃত্যুর আশঙ্কায় তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী ছেলেকে বড় মেয়ের কাছে তিন মুঠো খুদের (চালের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন বাবা-মা। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে শিশুটির নাম রাখা হয়েছিল ‘ক্ষুদিরাম’।

ক্ষুদিরাম বসু তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুল এবং মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে লেখাপড়া করেন। বিপ্লবী রাজনৈতিক দল যুগান্তরে যোগ দেন ক্ষুদিরাম বসু। ক্ষুদিরাম ‘সোনার বাংলা’ শীর্ষক বিপ্লবাত্মক ইশতেহার বিলি করার সময় গ্রেফতার হন।

১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকির সঙ্গে মিলে গাড়িতে ব্রিটিশ বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড আছে ভেবে তাকে গুপ্তহত্যা করার জন্যে বোমা ছুঁড়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড অন্য গাড়িতে থাকায় এ সময় ওই গাড়ির দুইজন ব্রিটিশ মহিলার মৃত্যু হয়।একজনের নাম মিসেস কেনেডি ও তার মেয়ে। প্রফুল্ল চাকি গ্রেফতারে আগেই আত্মহত্যা করেন। ক্ষুদিরাম গ্রেফতার হন এবং দুজন মহিলাকে হত্যা করার জন্যে তার বিচার হয় এবং চূড়ান্তভাবে তার ফাঁসির আদেশ হয়

মৃত্যুঞ্জয়ি শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী
মৃত্যুঞ্জয়ি শহিদ ক্ষুদিরাম বসু।

বোমা ছেঁড়ার পর ক্ষুদিরাম ২৫ মাইল পায়ে হেঁটে ওয়াইনি নামে এক স্টেশনে পৌঁছে চায়ের দোকানে এক গ্লাস পানি চেয়েছিলেন। সেখানে তিনি ফতে সিং এবং শিউ প্রসাদ সিং নামে দুজন কনস্টেবলের মুখোমুখি হন। সেখানেই চিরদিনের মত আটক হন ক্ষুদিরাম। পরে ওই রেল স্টেশনের নাম বদল করে রাখা হয় ‘ক্ষুদিরাম বোস পুসা স্টেশন’।

ক্ষুদিরামের বিচার শুরু হয় ২১ মে ১৯০৮ তারিখে যা ‘আলিপুর বোমা মামলা’ নামে পরিচিত। বিচারক ছিলেন মি. কর্নডফ এবং দুজন ভারতীয় লাথুনিপ্রসাদ ও জানকীপ্রসাদ।

রায় শোনার পরে ক্ষুদিরামের মুখে হাসি দেখা যায়। তার বয়স খুব কম হওয়ায় বিচারক কর্নডফ প্রশ্ন করেন, তোমাকে যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মরতে হবে সেটা সে বুঝেছে কিনা? এ সময় ক্ষুদিরাম মুচকি হাসি হেসেছিলেন। পরে বিচারক তাকে আবার প্রশ্নটি করলে তিনি বলে ওঠেন ‘বন্দেমাতরম’।

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২ মে, ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টেটসম্যান লিখেছিল: একটা ছেলেকে দেখার জন্যে রেল স্টেশনে ভিড় জমে যায়। ১৮ অথবা ১৯ বছরের এক কিশোর হলেও তাকে রীতিমত দৃঢ় দেখাচ্ছিল। প্রথম শ্রেণির এক রেল কামরা থেকে বেরিয়ে সে হেঁটে আসছিল এক উৎফুল্ল কিশোরের মত, যে কোনো উদ্বেগ জানেনা….গাড়িতে নির্দিষ্ট আসনে বসার সময় ছেলেটা চিৎকার করে বলে উঠল ‘বন্দেমাতরম’।

ফাঁসিতে ঝোলানোর সময় ক্ষুদিরামের বয়স ছিল ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here