খবর৭১ঃ ভারতজুড়ে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবার লকডাউন করা হয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ লকডাউন করে রাজ্য সরকার।
দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত দিল্লিতে লকডাউন বলবৎ থাকবে বলে জানান।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আগামীকাল (সোমবার) সকাল ৬টা থেকে ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত দিল্লিতে লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ওষুধের দোকান, সাপ্তাহিক বাজার, শাক-সবজি, ফলমূল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট খোলা থাকবে বলে জানান তিনি।
রবিবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিকদের উদ্দেশে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আপনাদের স্বাস্থ্য, দিল্লি এবং পুরো জাতির জন্য আমরা দেশের রাজধানীতে লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রবিবার সকালের দিকে দিল্লি পুলিশ মানুষের চলাচল সীমিত করতে রাজধানীতে ১৪৪ ধারা আরোপ করে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত আরোপিত লকডাউনের সময় দিল্লিতে কোনও ধরনের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কিংবা জনসমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেছেন, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিল্লিগামী সব ধরনের বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, লকডাউনের সময় গণপরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি মেডিক্যাল সেবায় নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য সেবা চালু থাকবে।
কেজরিওয়াল বলেন, আমরা জানি মানুষ সমস্যার মুখোমুখি হবেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য লকডাউন দরকার। এই লকডাউন চলাকালীন দিল্লির সীমান্ত সিলগালা থাকবে, তবে মানুষ জরুরি সব সেবা পাবেন।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ লকডাউন করে রাজ্য সরকার। আগামীকাল সোমবার বিকাল ৫টা থেকে আগামী ২৭ মার্চ বিকাল ৫টা পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। রাজ্য সরকারের দেওয়া জরুরি বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, লকডাউনের সময়ে জরুরি সংকটপূর্ণ পরিসেবা ছাড়া পৌর শহরগুলির বাকি সব কিছু বন্ধ রাখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য দেশের মতো কোভিড-১৯ বিস্তারের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ভারত। এ সংক্রমণ এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে খুব শিগগির ভয়াবহ আকার নেবে পরিস্থিতি।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে ভারতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪১ জনে আর একই সঙ্গে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের।
শুরুর দিকে ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাটাও বাড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৬ জন।
উল্লেখ্য, গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৩ হাজারের বেশি। করোনার থাবা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯২ হাজার। এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১৮০টি দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে চীনের চেয়েও করোনায় মারা গেছে ইতালিতে।