ডিম-আলু-পেঁয়াজ: সরকার নির্ধারিত দর এক সপ্তাহেও অকার্যকর

0
107

খবর ৭১: আমদানির খবরে পাইকারি বাজারে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। মঙ্গলবার থেকে প্রতি ১০০ পিস ডিম আগের দিনের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে গত কয়েকদিনে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দামও কমেছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। তবে এখনো খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দামের প্রভাব পড়েনি। দাম নির্ধারণ করে দেওয়া পণ্যগুলো বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম না কমায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে এখনো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্য তিনটি। পাড়া মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। প্রতি হালি ৫০ টাকা, কোথাও কোথাও ৫২ টাকা দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। অথচ সরকার নির্ধারিত দাম হচ্ছে প্রতি হালি ৪৮ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। যদিও সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম প্রতি কেজি আলু ৩৬ এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা।

এদিকে ঢাকার তেজগাঁও ডিমের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি ১০০টি ফার্মের মুরগির ডিম ১ হাজার ১২৫ থেকে ১ হাজার ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দিন দাম ছিল ১ হাজার ১৪৫ থেকে ১ হাজার ১৫৫ টাকা।

অন্যদিকে শ্যামবাজারে পেঁয়াজের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩-৪ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এখন আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫৫ টাকা দরে, যা ৪৫ থেকে ৫৮ টাকা ছিল।

অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৪ থেকে ৩৫ এবং দেশি পেঁয়াজের ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা দর বেঁধে দেওয়া হয়, যা ওই দিন থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে দর নির্ধারণের প্রায় সপ্তাহ হয়ে গেলেও বাজারে নির্ধারিত দামে বিক্রি হতে দেখা যায়নি।

দর বাস্তবায়নে প্রতিদিনই বাজারে অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীসহ সারাদেশে ভোক্তা অধিদপ্তর নিত্যপণ্যের বাজারে অভিযান চালিয়ে ১০৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। দর নির্ধারণের পর থেকে প্রতিদিনই এ অভিযান চলছে। ততে তাতে ক্রেতার নাগালের মধ্যে আসছে না পণ্যগুলোর দাম।

বাজারের এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার চার প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে আমদানির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর পরও কার্যত খুব বেশি প্রভাব পড়েনি ডিমের বাজারে। শুধু পাইকারিতে দাম কিছুটা কমতে দেখা গেছে।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, দেশে প্রতিদিন ডিমের দরকার ৪ থেকে সাড়ে ৪ কোটি পিস। আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি পিসের। সব ডিম এলেও তেমন কিছুই হবে না। হয়তো সাময়িক কিছুটা কমবে।

তিনি বলেন, তেজগাঁওয়ে পাইকারি পর্যায়ে ডিমের বেচাকেনা হয় রাতে। সোমবার রাতে প্রতি ১০০ ডিম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৩০ টাকা দরে। অর্থাৎ, প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১১ টাকা ৩০ পয়সা। এখনই বাজারে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, এলসি খুলে ডিম আমদানির পর তা ভোক্তা পর্যায়ে আসতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
আলু ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হালিম চৌধুরী বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তর এসে জরিমানা করে খুচরা ব্যবসায়ীদের। এতে ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেককে অভিযানের সময় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে খুচরায় কম দামে পণ্য বিক্রির সুযোগ তৈরি হয়নি।

এ সময় তিনি আলুর হিমাগার এবং পেঁয়াজের বড় বড় আড়তে অভিযান পরিচালনা করার দাবি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here