খবর ৭১ঃ প্রেম ঘটিত বিরোধের জেরে গুলশানের হুন্দাই লিড কোম্পানির টেকনিশিয়ান জাকিউর রহমান জুয়েল ও তার বন্ধু সবুজ হত্যা মামলায় দায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং অপর দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কাওসার মোল্লা (পলাতক) ও ফরহাদ গাজী (পলাতক)। আর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সুরুজ মিয়া ও সুপর্না। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ফরহাদ ও সুপর্না চাচাতো ভাই-বোন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম জাকিউর রহমান জুয়েল তার আত্মীয় মরিয়ম বেগমের উত্তরখানের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি আট বছর ধরে হুন্দাই লিড কোম্পানিতে টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করতেন। জুয়েলের সঙ্গে তার বন্ধু সবুজ একত্রে চলাফেরা করতো। সবুজের সঙ্গে সুপর্নার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
২০১০ সালের ২০ আগস্ট জুয়েল তার এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করছিলেন। ওই সময় ফরহাদের বোন সুপর্নার মোবাইল থেকে সবুজের মোবাইলে ফোন করে সবুজ ও জুয়েলকে ডেকে নেয়া হয়। এর পর তারা আর ফিরে আসেননি। চারদিন পর খোঁজাখুজি করে কোনো সন্ধান না পেয়ে জুয়েলের মোবাইলে ফোন করলে তালুট গ্রামের সুরুজ নামে এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলে। বিভিন্ন সময়ে ফোন করলে ওই গ্রামের ফরহাদ ও কাওসার জুয়েলের ফোন রিসিভ করতো। কিন্তু তারা জুয়েল ও সবুজের কোনো খবর দিতো না।
ওই ঘটনায় জুয়েলের চাচা মোতালেব হোসেন ২০১০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর চারজনকে আসামি করে উত্তরখান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি সুরুজ মিয়া ও তুহিন মাতব্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঘটনার পূর্বে ভিকটিমদের সুপর্নার মাধ্যমে ডেকে নিয়ে ফ্রুটিকা জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ গুঁড়া করে খাওয়ালে তারা মাতাল হয়ে পড়ে। তখন কাওসার ও ফরহাদ প্রথমে জুয়েলকে জবাই করে হত্যা করে। এর পর সবুজকে জোর করে শোয়াইয়ে সুরুজ মিয়া ও তুহিন মাতুব্বর জবাই করে হত্যা করে।
মামলাটি তদন্তের পর ডিবি পুলিশের এসআই হাফিজুর রহমান ২০১১ সালের ৩ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তুহিন মাতব্বর নামে এক আসামি কিশোর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ভিন্ন চার্জশিট দাখিল করা হয়।
২০১২ সালের ১৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। এর পর মামলার বিচারকাজ চলাকালে ট্রাইব্যুনাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
খবর ৭১/ইঃ