অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ: জনগণের অর্থের অপচয় রোধ করতে হবে

0
765
অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ: জনগণের অর্থের অপচয় রোধ করতে হবে

খবর৭১ঃ যৌক্তিক ও অত্যাবশ্যকীয় কারণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ না করার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।

আমরা মনে করি, জনগণের করের অর্থের অপচয় রোধে যৌক্তিক কারণ ছাড়া এবং যেখানে দু’একজনের দরকার সেখানে ১০-১২ জনের দলবেঁধে বিদেশ ভ্রমণ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাটি আমলে নেয়ার বিকল্প নেই।

এছাড়া যে কোনো প্রকল্পে অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে বিদেশ ভ্রমণ এবং এ খাতে মোটা অঙ্ক বরাদ্দ রাখার প্রবণতা রোধেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এজন্য আগে বিদেশ ভ্রমণের উপকারিতা কী, প্রকৃত প্রয়োজনীয় ব্যক্তিরা বিদেশ ভ্রমণে গেছেন কিনা এবং এ খাতে খরচের বিষয়গুলো অডিট করে দেখা প্রয়োজন।

‘সরকার কা মাল দরিয়া মে ঢাল’ বলে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে। এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হল- সরকারের, তথা জনগণের ট্যাক্সের অর্থের বেপরোয়া খরচ ও অপচয়ের নজির আমাদের দেশে বেশ পুরনো।

অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি জ্ঞান অর্জনের নামে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে অকারিগরি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের নজির আছে অনেক।

এভাবে প্রকল্প তো দূরের কথা, অন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জন করিয়ে ছাড়া হচ্ছে! যদিও অর্জিত অভিজ্ঞতা কোথায়, কীভাবে ব্যয় হবে তার সদুত্তর থাকে না অনেক ক্ষেত্রে।

শিউরে ওঠার মতো তথ্য হল, পুকুর খননের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যও বিদেশ ভ্রমণ করার নজির আছে এ দেশের সরকারি কর্তাদের। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, নাসার একটি মহাকাশ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যদের (বিজয়ী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র) বাদ দিয়ে এবং ভিসার ব্যবস্থা না করে সেখানে চলে গেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এ লজ্জা আমরা কোথায় রাখব! বিদেশ যাওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের লালায়িত হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, বিদেশ ভ্রমণের উপরি সুবিধা যুক্ত না হলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ফাইলই তোলা হয় না একনেক সভায়।

‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের ফাইলেই এমনটি ঘটেছে। কী ভয়াবহ পরিস্থিতি! অহেতুক ও ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণে কী লাভ, আগের ভ্রমণের ফল কী ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেয়া, খরচের যথাযথ অডিট করা এবং লোভনীয় টিএ-ডিএ কমিয়ে এনে একটি নীতিমালা তৈরি করা গেলে পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে বলে আশা করা যায়।

আমরা আশা করব, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে অবিলম্বে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here