জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান বাংলাদেশ সব সময় মনে রাখবে : প্রধান উপদেষ্টা

0
29

 

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাপান সবসময়ই আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু। জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান বাংলাদেশ সবসময় মনে রাখবে। শিক্ষা ও ক্রীড়াসহ বিনিয়োগ, মৎস্য চাষ, রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা এবং যুব উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে জাপানের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, স¤প্রতি আমি আপনাদের দেশ সফর করেছি এবং আমাকে ও আমার প্রতিনিধিদলের প্রতি যে উষ্ণতা ও আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে, তা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। এশিয়ায় বাংলাদেশ জাপানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে মিয়াজাকি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপানের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রæতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,জুলাই মাসে (অভ্যুত্থানে) যারা প্রাণ হারিয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য আমরা গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছি। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা মাতারবাড়ি প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে একে আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে’ বর্ণনা করেন। তিনি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন জাপানে জাইকা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তাকে বলেছি, আমরা সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি হতে চাই। প্রফেসর ইউনূস বাংলাদেশি তরুণদের জাপানে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর জন্য দেশটির প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, অনেক তরুণ কাজের জন্যও জাপানে যেতে পারেন। সমস্যাটা ভাষার। আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, জাপানি শিক্ষকরা এখানে আসুন বা দূরশিক্ষণ দিন, যাতে আমাদের লোকেরা জাপানি ভাষা ও কর্মক্ষেত্রের শিষ্টাচার শিখতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এটি একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি। হাজার হাজার তরুণ কোনও আশা ছাড়াই ক্যাম্পে বেড়ে উঠছে। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। মিয়াজাকি বলেন, জাইকা ২০২৬ সালে এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার এবং স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারে সহায়তা করার দিকে মনোনিবেশ করছে। তিনি বলেন, ‘জাইকা উভয় দেশের স্থানীয় সরকার, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় উন্নত আইসিটি মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ প্রবর্তনের প্রয়াসে বাংলাদেশকেন্দ্রিক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যুব উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা নারী ক্রীড়ায় বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন,আমাদের মেয়েরা সব জায়গায় জয় লাভ করছে। গতকাল আরেকটি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে তারা। আমরা হোস্টেলের সুবিধা বাড়াচ্ছি তবে তাদের স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণের জন্যও সহায়তা প্রয়োজন। মিয়াজাকি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, জাপান ইতোমধ্যে অনেক দেশে স্কুল প্রকল্পের জন্য স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছে। নারীদের ক্রীড়ায় আরও সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করবে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অর্থনৈতিক সংস্কার, রেলপথ নির্মাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সা¤প্রতিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান এবং আরও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জাপানের বার্ষিক ওডিএ সীমা ৩০০ বিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন করার অনুরোধ জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here