জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত হাসানের কফিন কাঁধে নিয়ে মিছিল: আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি

0
32

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত হন মো. হাসান (১৯)। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ছয় মাসেরও বেশি সময় পড়ে ছিল হাসানের মরদেহ। অবশেষে তার পরিচয় শনাক্ত শেষে অনুষ্ঠিত হয়েছে জানাজা। এরই মধ্যে হাসানের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জানাজা শেষে মরদেহ হস্তান্তরের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হাসানের মরদেহ রাখা কফিন কাঁধে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানান তারা।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে কফিন নিয়ে ভিসি চত্বরের দিকে কফিন মিছিল বের করেন ছাত্র-জনতা।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে?’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘সাইদ- ওয়াসিম-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’ সহ নানান স্লোগান দেন তারা।

জানাজা শেষে নিহত হাসানের বাবা মো. মনির হোসেন বলেন, আমার ছেলে গত ৫ আগস্ট হারিয়ে যায়। পরে তাকে আমরা প্রায় সব হাসপাতাল, ক্লিনিক, কবরস্থানসহ সবখানে খুঁজেছি- কিন্তু কোথাও পাইনি। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যাই। পরনে থাকা পোশাক দেখে ছেলেকে শনাক্ত করি।

শেখ হাসিনার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, আমি চাই আমার মতো কোনো বাবা যেন তার সন্তান না হারায়। সরকারের কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

আগামীকাল শনিবার ভোলা সদরে নিজ এলাকায় দ্বিতীয় জানাজার নামাজ শেষে সকাল ১০টার দিকে হাসানের মরদেহ দাফন করা হবে বলেও জানান মনির হোসেন।

কফিন মিছিলে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুউদ বলেন, ছয়মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বিপ্লবীদের রক্ত ঝরছে, অনেকে শহীদ হচ্ছেন। আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, কেউ যদি অন্য কিছুর দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে- তবে জুলাইয়ে যেমন দুই হাজার শহীদ হয়েছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনে আরও দুই হাজার জীবন দেবো। তবুও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার লড়াই চালিয়ে যাবো।

মো. হাসানের গ্রামের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলার কাছিয়া এলাকায়। যাত্রাবাড়ীতে বড় বোনের বাসায় থেকে কাপ্তানবাজারে দুলাভাইয়ের ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকানে কাজ করতেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here