বাংলাদেশের বন্ধু হবে পাকিস্তান, টাকা দেবে চীন, অস্ত্র দেবে তুরস্ক

0
24

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার প্রবল গণআন্দোলনের পর থেকেই ভারতের গণমাধ্যমে নানা ধরণের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে। যার অনেক তথ্যই ফ্যাক্ট চেকে মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন মোড় নিয়েছে। দীর্ঘ কয়েক যুগ পরে ফের বাংলাদেশ পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যও শুরু হয়েছে। পাকিস্তানিদের জন্য শুধু ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করছে না, ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চাইছে ঢাকা।

সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যম নিউজ১৮ দাবি করছে, পাকিস্তানের সেনা থেকে, পাক সেনা বা খানসেনাদের থেকে মুক্তি চেয়েছিল বাংলাদেশ। যার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, আজ তাদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের উপরে চাপ সৃষ্টির জন্যই কি পাকিস্তানের সেনার সঙ্গে আরও সখ্যতা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ? পাকিস্তানের সাথে মূলত বাণিজ্য সম্প্রসারণের পর থেকেই ভারতের গণমাধ্যমগুলো লাগাতার বাংলাদেশ পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে।

ভারতের এই গণমাধ্যম আরো দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ তো এখন ভারত বিরোধিতায় নেমেছে, ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ এখন চরমে। তারা যুদ্ধ করবে বলছে এবং তারা কিছু ট্যাংক বলে নিয়ে এসেছে। এখন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলে একটু অভিজ্ঞতার দরকার লাগে। যার একমাত্র অভিজ্ঞতা আছে, সে হচ্ছে পাকিস্তান। ১৯৪৮ সাল থেকে তারা ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করছে।’

ভারতের গণমাধ্যমগুলো আরো দাবি করছে, কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে হুমকি এসেছিল যে বাংলাদেশ চুপ করে বসে নেই। দরকার হলে তারাও (বাংলাদেশ) পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু ভারতকে ঘায়েল করার মতো বড় কোনো অস্ত্র বাংলাদেশের হাতে নেই। তাই এখন তাদের ভরসা চীন এবং পাকিস্তান। বন্ধু হবে পাকিস্তান, টাকা দেবে চীন, অস্ত্র দেবে তুরস্ক।

কিছুদিন আগেই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূস নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিনে, চীন আমাদের বন্ধু। রাস্তা ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে শুরু করে সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত, তারা বিভিন্নভাবে আমাদের সহায়তা করছে। বাংলাদেশ বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। কিছুদিন আগেই প্রধান উপদেষ্টা ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো মীমাংসা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, ‘বিষয়গুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি।’

বৈঠকে দুই দেশের সরকারপ্রধান ব্যবসা, বাণিজ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে সম্মত হয়েছেন। পাশাপাশি দুই নেতা চিনি শিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

গত কিছুদিন আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে তুরস্কের প্রায় ৩০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের মধ্যে এলপিজি, সিঙ্গার ইলেকট্রনিক্স এবং কোকাকোলা বোটলিং উল্লেখযোগ্য। তুরস্ক নতুন করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মেশিনারিজ ইন্ডাস্ট্রি, অবকাঠামো এবং জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে তুরস্ক বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি ও সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘তুরস্ক বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করে। তারা যুতসই সামরিক সরঞ্জামে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। আমাদেরও কিছু আগ্রহ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রতিরক্ষা বিভাগ নেবে।’

নেটিজেনরা বলছেন, বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অন্যান্য দেশগুলোর সাথে ভালো হোক, সেটি দিল্লি কখনই ভালোভাবে দেখে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here