দেশে অকাল মৃত্যুর ২০ ভাগ বায়ু দূষণে: বিশ্ব ব্যাংক

0
183

খবর ৭১: দেশে ২০ ভাগ অকাল মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ- এমন তথ্য উঠে এসেছে বিশ্ব ব্যাংকের ‘বিশুদ্ধ বায়ু পাওয়ার চেষ্টা: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণ ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দশ শহরের নয়টিই দক্ষিণ এশিয়ায়, তার মধ্যে ঢাকা একটি।

প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পাঁচ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত দূষণকারী কণার উপস্থিতি থাকলে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য ধরে নেওয়া হয়। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র এলাকাতেই দূষণের মাত্রা অন্তত ২০ গুণ বেশি।

এতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতি বছর অন্তত ২০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। একই কারণে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

বায়ু দূষণ শিশুদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। দূষণে শ্বাসনালীর বিভিন্ন রোগ এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ তৈরি হয় বলে গবেষণায় ওঠে এসেছে।

এতে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য সেবার খরচ বেড়ে যায়; উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়।

বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বায়ু দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় প্রভাব ফেলে।

সঠিক পদক্ষেপ ও নীতির মাধ্যমে বায়ু দূষণ রোধ সম্ভব জানিয়ে আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বায়ু দূষণ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে জাতীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি অঞ্চলিক (দক্ষিণ এশিয়া) পর্যায়েও সম্মিলিত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ।

এসব ক্ষেত্রে নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।

বিশ্ব ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, দূষিত বাতাস দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে এবং এয়ারশেডে আটকে যেতে পারে। একই এয়ারশেড পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।

দেখা গেছে, কাঠমান্ডু, ঢাকা ও কলম্বোর মতো শহরের দুই-তৃতীয়াংশ দূষিত বায়ু আসে বাইরে থেকে।

বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, এই চারটি দেশে বায়ু মানের উন্নতির জন্য ‘কাঠমান্ডু রোডম্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্ব ব্যাংকের রিজিওনাল ইন্টিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক সেসিল ফ্রুম্যান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো একই এয়ারশেডে অবস্থিত। এসব অঞ্চলের বায়ুর মানও একই। তাই দেশগুলো সমন্বিত ব্যবস্থা নিয়ে বায়ু দূষণের উদ্বেগজনক মাত্রা কমাতে পারে। এক সঙ্গে কাজ করলে দ্রুত ও কম খরচে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।

বিশ্ব ব্যাংক মনে করে, এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বৃহৎ কারখানা ও পরিবহন খাতের ওপর নজর দিয়ে নীতিগত ব্যবস্থা নিলে ‘আংশিক সাফল্য’ পাওয়া যেতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহত্তর অগ্রগতির জন্য কৃষি, আবাসিক রান্না ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে নীতিনির্ধারকদের।
সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় বছরে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব- বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here