`১৫ দিনের মধ্যে দিনকাল পত্রিকা খুলে না দিলে সচিবালয় ঘেরাও’

0
125

খবর ৭১: সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। মুক্ত সাংবাদিকতা দুরে থাক সাংবাদিকদের প্রাণ রক্ষাই এখন দায় হয়ে পড়েছে। সাংবাদিক নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমের উপর খড়গ নেমে এসেছে। ১৯৭৫ সালে ৪টি পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এবারও ক্ষমতায় এসে অসংখ্য পত্রিকা ও টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। পঞ্চাশজন সাংবাদিক হত্যা করেছে।দিনকাল, আমার দেশসহ অন্তত ৫০০ পত্রিকা বন্ধ হয়েছে এসরকারের আমলে। দিনকালসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন,আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উদ্যোগ নেয়া না হলে প্রেস কাউন্সিল ও সচিবালয় ঘেরাও করা হবে। এসময় নেতৃবৃন্দ সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যা নির্যাতনের বিচার ও সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ারও জোর দাবি জানান।
দৈনিক দিনকালের ডিক্লেয়ারেশন বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রে্স ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী , সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারি ও দৈনিক দিনকালের ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, কলামিস্ট ড. মাহবুব হাসান, ডিইউজের সহ সভাপতি বাছির জামাল ও রাশেদুল হক, সাবেক সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগুজী, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদ দিদারুল আলম দিদার, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, বাংলাদেশ ফফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী। এছাড়া সবাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য রফিক লিটন প্রমুখ।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদ ইতোমধ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। অবিলম্বে দিনকাল খুলে না দিলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।

এম আবদুল্লাহ বলেন, এই সরকার দিনকাল বন্ধ করে দিয়ে অতীতের মতো আরো আরেকটি কালো দিন উপহার দিয়েছে। এর আগে আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ বহু সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে একের পর এক কালো দিবস উপহার দিয়েছে। এই সরকার গণমাধ্যমের শত্রু হিসেবে বারবার প্রমাণ দিয়েছে। দিনকাল বন্ধ করে আবারও প্রমাণ দিল। এভাবে দিনের পর দিন মিডিয়ার উপর কালো থাবা আর সহ্য করা যায় না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দিনকাল পত্রিকা খুলে না দিলে প্রেস কাউন্সিল সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচী পালন করা হবে। সেই আন্দোলনে দিনকালসহ বন্ধ সকল গণমাধ্যম খুলে দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

নুরুল আমিন রোকন বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনও তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকালসহ সব মিডিয়া খুলে না দিলে সরকারের পরিণাম ভাল হবে না। তাই অবিলম্বে দিনকালসহ সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। তানাহলে এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক ইউনিয়ন সবাবেশ করেছে।

এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, দিনকাল বন্ধ করে সরকার নিজের পায়ে কুড়াল দিয়েছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে দিনকাল বন্ধের খবর প্রকাশিত হয়েছে। জাতিসংঘ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারপরও সরকার শুধুমাত্র গায়ের জোরে দিনকাল পত্রিকার ডিক্লারেশন বন্ধ রেখেছে। আমি অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দেয়া জোর দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে দিনকাল খুলে না দিলে আপনাদের ভয়াবহ মাশুল দিতে হবে। অতীতেও গণমাধ্যম বন্ধ করে সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি, এবারও দিনকালসহ বিভিন্ন মিডিয়া বন্ধ করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। বর্তমাম সরকারের সময় অন্তত পঞ্চাশজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।পাঁচ শতাধিক সংবাদ মাধ্যম বন্ধ করে হাজার হাজার সাংবাদিকদের গ্রাস কেড়ে নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে এসরকারের শেষ রক্ষা হবে না বলে তিনি হুশিয়ার করে দেন। সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, গুম-খুনের কথা যাতে জনসমক্ষে উন্মোচিত হতে না পারে, সে জন্য একের পর এক পত্রিকা বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন সাংবাদিকদের জন্য এক আতঙ্কের নাম। আজ সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেন না।

আবদুল হাই শিকদার বলেন, আওয়ামী লীগের কাজই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা। স্বাধীনতার পর তারা ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। এবারও তারা দিনকালসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা গণমাধ্যমের উপরে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। যে যেখানে আছে সবাই একত্রে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই এদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে আসবে।

মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনকাল পত্রিকা বন্ধ সরকারের সবশেষ আক্রমন। এর আগেও অসংখ্য পত্রিকা সরকার বন্ধ করেছে। বর্তমানে কেউ বলে না দেশে গণতন্ত্র আছে। এই সরকার কতৃত্ববাদী সরকার। এই সরকারের পতনই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here