ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৩৫ কিমি. যানজট

0
174

খবর৭১ঃ বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা টোল আদায় বন্ধ থাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার ভোর রাত থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তারটিয়া পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়।

যানজট ও প্রচণ্ড গরমে ঘরমুখো মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া গন্তব্যে যেতে তিন থেকে চার গুণ বেশি সময় লেগেছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় এ নিউজ লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটার যানজট ছিল।

যানজট নিরসনে পুলিশ সদস্যরা যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার নিজেই মহাসড়কের এলেঙ্গাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করেন।

সরেজমিন শুক্রবার বিকালে দেখা যায়, মহাসড়কের বাসের পাশাপাশি খোলা ট্রাক ও পিকআপেও ঝুঁকি গন্তব্যে ফিরছে মানুষ। প্রচণ্ড রোদ ও বৃষ্টিতে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। এছাড়া অনুমতি নিয়ে মহাসড়কে অন্য জেলার মোটরসাইকেলও চলছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ে ১২-১৩ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়। কিন্তু ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েক গুণ বেশি যানবাহন সেতু পারাপার হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টা হতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭শ টাকা। এতে সেতুর পূর্ব টোলপ্লাজা দিয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে ২৫ হাজার ১১৩টি পরিবহণ পার হয়েছে।

অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী ১৮ হাজার ৪৮২টি পরিবহণ সেতুর পশ্চিমপাড় টোলপ্লাজা অতিক্রম করেছে । এছাড়া মোটরসাইকেল সেতু পারাপার হয়েছে ৬ হাজার ৩৪১টি।

দুপুর ১২টায় মহাসড়কের পৌলি এলাকায় কথা হয় কুড়িগ্রামগামী অজয় দত্তের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল ৫টায় বাইপাইল থেকে গাড়িতে উঠেছি। দুপুর পর্যন্ত টাঙ্গাইলের পৌলি পর্যন্ত এসেছি। খাবারও খেতে পারছি না। কোথায় পানিও পাচ্ছি না। গরমসহ সব মিলিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ট্রাকচালক কাদের মোল্লা বলেন, বেড়িবাঁধ থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে কখনো টানা ৩০ মিনিট গাড়ি টানতে পারিনি। সড়কের দিকে তাকালে শুধু গাড়ি আর মানুষ। পা ফেলার মতো জায়গা নেই।
বগুড়াগামী রাশেদা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আমরা গরম সহ্য করতে পারলেও আমার তিন বছরের ছেলেটি গরম সহ্য করতে পারছে না। সবই মিলিয়ে আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ঈদের মতো এবারও যানজটমুক্ত ঈদ উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস সেতু পূর্ব পাড় গোলচক্কর থেকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা দিয়ে যাতায়াত করছে। আর গরুবাহী যানবাহন ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করছে।

এছাড়া যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মহাসড়কে ৬২০ জন পুলিশ ও ১০০ জন এপিবিএন সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হাইওয়ে পুলিশ ও সেতু কর্তৃপক্ষের চারটি রেকার সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। সড়ক পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে সড়কের বিভিন্ন জায়গা মনিটরিং করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here