খবর৭১ঃ আর মাত্র দুই দিন পরেই উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী শনিবার এই সেতু উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে পদ্মা সেতুর এপার ওপারে বইছে আনন্দের বন্যা। শতভাগ নির্মাণ কাজ শেষে গতকাল বুধবার কর্তৃপক্ষকে পদ্মা সেতু বুঝিয়ে দিয়েছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। আগের দিন মঙ্গলবার প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সেতুর সব কাজ বুঝে নিয়ে ঠিকাদারকে ‘টেকিং ওভার’ সার্টিফিকেট দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, পদ্মা সেতুর কাজ শেষে কর্তৃপক্ষকে বুধবার বুঝিয়ে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আগামী এক বছর ধরে অবকাঠামোর ছোটখাটো কাজ চালিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ২০২৩ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্প শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে সেতুর কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে বা সমস্যা হলে তা ঠিক করে দেবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নদী শাসনের কাজ এখনও বাকি প্রায় ৭ শতাংশ। ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার কাজও প্রায় ৪ শতাংশ বাকি। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সেই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায় নির্মিত এই সেতুর মূল সেতুর নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতু, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া, জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনসহ সেতুর কাজ চলে ছয়টি ভাগে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই সেতুর কাজ শুরুর আগে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল।
পরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত করলে তাদের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যে দেশের টাকায় এই সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় সাড়ে সাত বছর পর আগামী শনিবার বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
সেতু উদ্বোধন ঘিরে পদ্মাপাড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। উদ্বোধন ও সমাবেশস্থলের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। অনুষ্ঠানস্থল ও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে চলছে সাজসজ্জা। সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সাইবার ওয়ার্ল্ড মনিটরিংসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাজানো হচ্ছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা। কোথাও কোনো ধরনের নেতিবাচক তথ্য পাওয়া গেলে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।