মৌসুম শেষ হলেও থামছে না সুন্দরবনের গোলপাতা আহরণ

0
152

স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট:সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণে চলছে যেন হরিলুট। মৌসুম শেষ হলেও থেমে নেই নৌকা ভর্তি গোলপাতা আহরণ। রাজস্বের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায় করায় বাওয়ালিরাও অতিরিক্ত পাতা ও গাছ নিয়ে আসছেন। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অ লের বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢেউটিনের বিকল্প হিসেবে ঘরের ছাউনিতে গোলপাতা ব্যবহার করে থাকেন। বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমা লের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসতঘর ও রান্নাঘরের চাল ছাউনির অন্যতম উপাদান গোলপাতা। গোলপাতার ঘর পরিবেশবান্ধব। এ পাতা দিয়ে তৈরি ঘরে শীত মৌসুমে ঠাণ্ডা অনুভব হয় না। আবার গরমের সময় তেমন গরম অনুভব হয় না। গোলপাতার ঘর হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর বসবাসের সবচেয়ে উপযোগী। এ পাতার দাম টিন বা অন্য যে কোনো ধরনের ছাউনির চেয়ে অনেক কম। তাই এ অ লের মানুষের কাছে গোলপাতার বেশ সমাদর রয়েছে। প্রতি গোলপাতা আহরণ মৌসুমে এ অ লের কয়েক হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ, পরিবহন ও বিক্রির কাজে সংশ্নিষ্ট থাকেন।
জানা যায়, গোলপাতা আহরণে মন্ত্রনালয়ের ধার্য রয়েছে অতিরিক্ত রাজস্ব। বন কর্মকর্তারা বলছেন, ধার্যকৃত রাজস্বের বেশি টাকা আদায় করতে পারে না কুপ কর্মকর্তা। গোলপাতা আহরণ ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও এপ্রিলেও দেখা গেছে গোলপাতা বোঝাই নৌকা।
সুন্দরবন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই ও শ্যালা নামক দুটি কূপের আওতাধীন এলাকায় পাস-পারমিট প্রক্রিয়া শেষে বনে প্রবেশ করে বাওয়ালিরা। কয়েকজন বাওয়ালি জানান, সরকারি রাজস্বের চেয়েও ৩ গুন টাকা দিতে হয় বন বিভাগের অসাধূ কর্মকর্তাদের। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা বেশি করে গোলপাতা বোঝাই দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ গোলপাতার নিচে নিয়ে আসছেন কর্তন নিষিদ্ধ বিভিন্ন গাছ।
বাওয়ালি আঃ রহিম (ছদ্মনাম) বলেন, পাস পার্মিট বাদেও প্রতিটা স্টেশনে বকশিশ দিতে হয় বন কর্মকর্তাদের। সরকারি ভারে যে টাকা রাজস্ব নেওয়ার কথা সেখানে নেওয়া হচ্ছে তিন চার গুন বেশি টাকা। না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়।আবশ্য টাকা বেশি দিলে গোলপাতা ও বিভিন্ন প্রকার গাছ কেটে আনা যায়।
চাঁদপাই রেঞ্জর ষ্টেশন কর্মকর্তা ও গোলপাতা কুপের কর্মকর্তা মোঃ ওবাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে বাওয়ালিদের ক্ষোভ ও অভিযোগ রয়েছে। তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার তার কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগী বন কর্মকর্তা ( ডিএফও, বাগেরহাট) মুহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন জানান, গোলপাতা নিয়ে ফেরার সময়ে নৌকার ঝুল হিসেবে বন থেকে কোন গাছ কাটতে পারবে না বাওয়ালিরা। তিনি দাবি করেন, সরকারের রাজস্বের চেয়ে বেশি টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই কুপ আফিসের । বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here