সুইসসহ বিদেশি ব্যাংকে যারা অর্থ রেখেছেন, তাদের তালিকা দেওয়ার নির্দেশ

0
190

খবর৭১ঃ পানামা ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশের যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সিআইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আগামী ৬ মার্চ এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংকে যারা অর্থ রেখেছেন, তাদের একটি তালিকা দাখিল করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে প্যারাডাইস ও পানামা পেপারসে বাংলাদেশি ৬৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা গত ২৬ জানুয়ারি আদালতে দাখিল করে বিএফআইইউ। পরদিন দুদক ১৮ জনের একটি তালিকা দাখিল করে।

তারও আগে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর দুদক পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে নাম আসা অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা পৃথক দুটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। হাইকোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বিষয়টি শুনানির জন্য আসে। শুনানি নিয়ে আদালত ফের এ আদেশ দেন।

শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, অফশোরসহ অন্যান্য কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন বা সম্পত্তি অর্জনসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য মূলত বিএফআইইউ সর্বাধিক উপযুক্ত মাধ্যম। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে, অর্থাৎ মূল অনুসন্ধানাধীন বিষয় তথা ওই ব্যক্তি কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দেশে অফশোর কোম্পানি খোলা এবং তাতে বিনিয়োগ ও লেনদেনসংক্রান্ত তথ্যাদি বিএফআইইউ থেকে পেয়ে- তা দাখিল করেছি।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার দুদক আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, পানামা পেপারসে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে কী করা হয়েছে, সেটা আমরা দেখতে চাই। আগামী ৬ মার্চ এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হলো।

গত বছরের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টকে ঢাকা-চট্টগ্রামে তদন্তাধীন সাত মামলায় ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ৭৪৮ টাকা পাচারের তথ্য দিয়েছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সে প্রতিবেদনে অর্থপাচারকারী ব্যক্তির মধ্যে উঠে আসে যুবলীগের সাবেক (বহিষ্কৃত) নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর একেএম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদের নাম। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও দুবাইয়ে টাকা পাচার করেছেন বলে উল্লে­খ করা হয় সিআইডির প্রতিবেদনে।

বিদেশি ব্যাংক, বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন। সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য বিদেশি ব্যাংকে বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে, সে তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here