চীনে করোনার রিপোর্ট করলেই গুম

0
324

খবর৭১ঃ কখনো আটক করা হচ্ছে। কখনো গুম করে ফেলা হচ্ছে। কখনো আবার বিচার না করেই মাসের পর মাস বন্দি করে রাখা হচ্ছে।

চীনে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করায় এভাবেই চরম মূল্য দিতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকার।

প্রশাসনের নির্দেশেই সাংবাদিকদের ওপর দমন-পীড়ন অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। খবর সিএনএন। ২০১৮ সালে ‘টারমিনাস ২০৪৯’ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেন সাংবাদিক মেই, তার সহকর্মী কাই ওয়ে ও আরেক অংশীদার ট্যাং।

এখানে নারী যৌন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলন মি টু ও অভিবাসী অধিকারের মতো বিভিন্ন ইস্যুতে খবর প্রকাশ করতেন।

কিন্তু এসব খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলেই বেশির ভাগ খবরই রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী তকমা দিয়ে মুছে দেওয়া হতো।

এর পরও তারা এসব খবর বারবার প্রকাশ করতেন। ২০২০ সালের শুরুর দিকে করোনা মহামারি নিয়ে বিভিন্ন খবর প্রকাশ করতে শুরু করেন তারা।

কিন্তু কিছু দিন পরই সাংবাদিক মেইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি তার পরিবারকে জানান মেই’র বস কাই ওয়ে।

মেই’র ভাই চেন কুন বলেন, খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার সন্দেহ হয়, ওয়েবসাইটে করোনা নিয়ে রিপোর্ট করার কারণেই তাকে আটক করা হয়েছে।

এরপর মেই’র বস কাই ওয়ে ও ট্যাংকেও নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর মাত্র ১০০ মিনিটের বিচারে তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ট্যাংকে মে মাসেই ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ১৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করে আগস্টে বের হন মেই ও কাই ওয়ে।

চীনের উহানে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করেন নারী সাংবাদিক ঝাং ঝান। অন্য যেসব নিরপেক্ষ সাংবাদিককে চীনে আটক রাখা হয়েছে ঝাং সেসব নিয়েও রিপোর্ট করেন। রিপোর্ট করেন ভুক্তভোগীদের পরিবারকে হয়রানি করা নিয়েও। কিন্তু ২০২০ সালের ১৪ মে হঠাৎই উহান থেকে নিখোঁজ হন ঝাং।

এর এক দিন পর কমপক্ষে ৪০০ মাইল দূরের শহর সাংহাইয়ের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে বলে জানানো হয়। ১৯ জুন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয় সাংহাইয়ে। এর তিন মাস পর ৯ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয় তার আইনজীবীকে।

‘অকারণে বিবাদ ও অশান্তি সৃষ্টির’ দায়ে ডিসেম্বর মাসে ঝাংকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে ঝাং একাধিকবার অনশনও করেন।

অভিযোগ রয়েছে-কারাগারে তাকে পেটের ভেতর নল ঢুকিয়ে জোর করে খাওয়ানো হয়। ওই নল যাতে তিনি বের করতে না পারেন, সেজন্য তার হাত-পা সবসময় বেঁধে রাখা হয়।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ৩৮ বছর বয়সি নারী সাংবাদিক ঝাং ঝান আগে ছিলেন আইনজীবী। আইনের পেশা ছেড়ে তিনি সাংবাদিকতার জগতে আসেন। ঝাং এখন সারা বিশ্বেই এক পরিচিত নাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here