সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

0
187

খবর ৭১:  বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ ‘হাউজ ফুল’ ছিল। ওই ম্যাচ ৪ উইকেটে হারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তবুও সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত থাকেননি সমর্থকরা। স্বাগতিকদের সিরিজে ফেরার লড়াইয়ে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘বাংলাদেশ’, বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে মুখরিত করেছেন গোটা স্টেডিয়াম।

সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক রিয়াদ বলেছিলেন, এই সিরিজ দিয়ে সমর্থকদের বিশ্বাস ফেরাতে চায় তার দল। নিশ্চিত করেই বলা যায়, সে কথাও রাখতে পারলেন না অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচে স্কোরবোর্ডে ১২৭ রান তুলেও ৪ উইকেটে হার। আজ (শনিবার) দ্বিতীয় ম্যাচে আরও ব্যর্থ টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপ। পুঁজি মাত্র ১০৮ রানের। যা অনুমেয় সেটিই হলো শেষপর্যন্ত। পরাজয় ৮ উইকেটে। এতে ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সিরিজ জয়টিও নিশ্চিত করে রাখল সফরকারীরা।

এ ম্যাচ ছাপিয়ে অবশ্য আলোচনায় নিরাপত্তা ইস্যু। করোনাভাইরাসের মধ্যে দর্শক ফিরিয়ে বেকায়দায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ইনিংসের ১৩তম ওভারে কড়া নিরাপত্তা আর বেষ্টনী ডিঙিয়ে নর্দান গ্যালারি থেকে সোজা মাঠে ঢুকে পড়েন এক সমর্থক। সেই ওভারের প্রথম বলের পর বোলার মুস্তাফিজের পায়ের কাছে কাছে বসে ‘ভালোবাসা’ প্রকাশ করেন সেই সমর্থক। পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে মুস্তাফিজকেও মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয়।

১০৯ রানের ছোট লক্ষ্য। সেটি আরও ছোট বানিয়ে দিলেন বাংলাদেশ দলের ফিল্ডাররা। একের পর এক সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন সাইফ হাসান, তাসকিন আহমেদরা। যদিও শুরুটা ভালোই করেছিলেন বোলাররা। এদিন ১ রান করে শুরুতেই ফিরে যান পাকিস্তানের ওপেনার বাবর আজম। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। আগের ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনা পাকিস্তান দলপতি এদিনও একইভাবে আউট হন।

এরপর বেশ সাবধানে এগোতে থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামান। কিছুটা ধীর-লয়ে লক্ষ্যের দিকে ছুটেছেন সফরকারীরা। টার্গেট কম থাকলেও কিছুটা চাপ তৈরি করার চেষ্টা করেন দারুণ বল করা পেসার তাসকিন, মুস্তাফিজ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিনার শেখ মেহেদী নিজের ৪ ওভারের স্পেল শেষ করেন ২৩ রান দিয়ে।

আগের ম্যাচে যাকে বল দেওয়া নিয়ে এতো বিতর্ক সেই আমিনুল ইসলাম বিপ্লবও শুরুটা ভালোই করেন। কিন্তু তার বলে ফখর জামানের সহজ ক্যাচ হাস্যকর ঢঙে মিস করেন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া সাইফ হাসান। ক্যাচ মিসের সাথে বাঁচাতে পারেননি চারও, তাতেই জুটির পঞ্চাশ ছুঁয়েছে রিজওয়ান-ফখর। পরে রিজওয়ান ৩৯ রান করে আউট হলে ৮৫ রানের পার্টনারশিপ।
তার আগেই অবশ্য ব্যক্তিগত ফিফটির স্বাদ পান ফখর। তার অপরাজিত ৫০ বলে ৫৬ রানের কল্যানে ৮ উইকেট ও ১১ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দল এ ম্যাচেও ওপেনিংয়ে ভালো শুরু পায়নি। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান ফেরেন দলীয় ৫ রানে। সাইফ আগের ম্যাচে ১ রান করলেও এদিন রানের খাতা খুলতে পারলেন না। নিজের খেলা প্রথম বলেই ফেরেন শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউর ফাদে পড়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নাঈম মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে আউট হন ২ রান করে।

সেখান থেকে আবারও দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দলকে বিপদ মুক্তির ইঙ্গিত দেন এই তরুণ। তবে শাদাব খান নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ২০ রানে থাকা আফিফকে বোকা বানিয়ে ফেরান। আফিফের বিদায়ের পর পাওয়ার প্লেতে ৩৬ রান তোলা বাংলাদেশ ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে তোলে ৬৪ রান। চতুর্থ উইকেটে শান্ত ও অধিনায়ক রিয়াদ ২৮ রানের জুটি গড়েন। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া রিয়াদ ১২ রান করে হারিস রউফের বলে আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

আগের ম্যাচে ব্যর্থ শান্ত এদিন লড়াই করেন পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে, হাঁটছিলেন ফিফটির পথে। তবে মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেননি। লেগ স্পিনার শাদাবের বলে ফিরতি ক্যাচ দেন। তার ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪০ রান। দুই সেট ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আবার বড় রানের স্বপ্নে ভাটা পড়ে স্বাগতিক শিবিরের। গত ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শেখ মেহেদী হাসান সুবিধা করতে পারেননি আজ। ফেরেন ৮ বলে ৩ রান করে।

পরে নুরুল হাসান সোহানের ১১ রানের সঙ্গে শেষদিকে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব অপরাজিত ৭ রানের কল্যানে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দল ১০৮ রানের পুঁজি পায়। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও শাদাব খান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here