ঢাবিতে সফট লোনে দীর্ঘসূত্রতা, হতাশ শিক্ষার্থীরা

0
189

খবর৭১ঃ লোনের আবেদন করেও প্রশাসনিক জটিলতায় এখনো টাকা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। গত বছরের নভেম্বরে দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বিনা সুদে আট হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান ও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যেই লোনের জন্য শিক্ষার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেয়। ফেব্রুয়ারির শুরু ও মাঝামাঝিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৫৬৮ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৮২৫ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১৪০৪ জন শিক্ষার্থী তাদের সফট লোনের টাকা পেয়ে যান।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন শিক্ষার্থীদের থেকে সফট লোনের জন্য আবেদন সংগ্রহ শুরু করে জুনের ৭ তারিখ থেকে। আবেদনের সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে দিলেও শিক্ষার্থীদের দ্রুততম সময়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হয়।

সফট লোনের জন্য আবেদন করে টাকা না পেয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছেন আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এটা জানা গেছে। আবেদনকারী একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার পুরাতন মোবাইল দিয়ে অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা দিতে ঝামেলা হচ্ছিল, তাই নতুন মোবাইল কিনবো ভেবে লোনের জন্য আবেদন করেছিলাম। মনে করেছি দ্রুত সময়ে টাকা দিয়ে দেবে। এদিকে অনলাইনে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, লোনের টাকা না পেয়ে বন্ধুদের থেকে টাকা নিয়ে নতুন মোবাইল নিয়েছি।’

আরেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সফট লোনের টাকা এখনো না পাওয়ায় আমি হতাশ। আট হাজার পাওয়ার জন্য আমাকে প্রায় দুই হাজার টাকার বেশি খরচ করতে হয়েছে। কবে টাকা পাবো সেটা এখনো অনিশ্চিত।’
সফট লোন অনুমোদন কমিটির সদস্য-সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-হিসাব পরিচালক (লোন) মো. মশিউর রহমানের কাছে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী সফট লোনের জন্য আবেদন করেন। এটি ইউজিসিতে পাঠালে তারা শর্তসাপেক্ষে আবারও আবেদনের সুযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বিভাগগুলোর মাধ্যমে আবারও আবেদনের অনুরোধ করে অনুমোদন কমিটি। এতে আবেদন করেন ৬০০ জনের মতো শিক্ষার্থী।’

টাকা দিতে দেরি করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকেই তাদের ১৩ ডিজিটের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও ৯/১০ ডিজিটের রাউটিং নাম্বারগুলো ভুলভাবে পাঠিয়েছে। এগুলোর তথ্য সঠিক না হলে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। আমরা পুনরায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের বিভাগে তথ্যগুলো কারেকশন করার জন্য পাঠাচ্ছি। এতে করে বেশি সময় লাগছে।’

শিক্ষার্থীদের তথ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হলে চলতি মাসের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

তবে এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীরা তাদের সফট লোনের টাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কিংবা অধ্যয়নকালীন চারটি সমান কিস্তিতে বা এককালীন পরিশোধ করতে পারবেন। ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর নামে ট্রান্সক্রিপ্ট ও সাময়িক বা মূল সনদ প্রদান করা হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here