পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: পাইকগাছায় এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা তুলে নিতে বাদী ও স্বাক্ষীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পর মামলা হলে ধর্ষক রকি শেখ’র পিতা বিষযটি মিমাংশার প্রস্তাব দেন। এতে রাজী না হওয়ায় তিনি ঐ হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রীতিমত ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে ধর্ষিতার পরিবার।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুন বৃষ্টিবিঘ্নিত দুপুরে উপজেলার সোনতনকাটি গ্রামের শেখ পাড়ার আমজেদ শেখের ছেলে রকি প্রতিবেশী ফাইজার শেখ’র জনৈকা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েকে স্থানীয় বাগানের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত বাড়ীতে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার ভাই জুয়েল শেখ বাদী হয়ে ২০ জুন রকির বিরুদ্ধে পাইকগাছা থানায় একটি মামলা করেন। যার নং-১৯।
থানা পুলিশ জানায়, ইতোমধ্যে ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্ধী ও আলামত সংগ্রহ সহ ডিএনএ’র স্যাম্পল পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এদিকে ঘটনায় সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে সোনাতনকাটির বারিকুল শেখ ওরফে মুক্তর স্ত্রী স্থানীয় মুদি দোকানি নার্গিস বেগম (৫৫) জানান, গত ১৯ জুন দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে আমজেদ শেখের ছেলে রকি (২০) মাথায় গামছা দিয়ে তার দোকান থেকে ১টি সিগারেট ধরিয়ে সামনে ঐ কিশোরীর ঘরের দিকে যায। এ সময় কিশোরী বারান্দায় বসে মোবাইলে গেম খেলছিল। এবিষয়ে ভিকটিম জানায়, ঘটনার আগে বৃষ্টির মধ্যে রকি তাকে বলে যে, তার মা নাকি দোলার মোড়ে আম-কাঁঠাল নিয়ে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছে। এসময় রকির কথায় সে মোড়ের দিকে রওনা দেয়। এসময় রকিও তার পিছু নেয়। পথিমধ্যে তাদের বাড়ির প্রায় ৩ শ’ গজ দুরে পৌছালে বৃষ্টির মধ্যে রকি তার হাত চেপে ধরে জোরপূর্বক পাশের একটি বাগানের মধ্যে পরিত্যক্ত বাড়ীতে নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তার মুখ চেপে ধরে খারাপ কাজ করে চলে যায়।
ভিকটিমের ভাইয়ের স্ত্রী তন্নি জানান, ভেজা অবস্থায় তার ননদ (ভিকটিম) বাড়িতে ফিরে কান্ন-কাটি শুরু করলে কারণ জানতে চাইলে সে বিস্তারিত ঘটনার কথা খুলে বলে। ধর্ষিতার ভাই জুয়েল শেখ বলেন, হরিঢালী ক্যাম্প পুলিশের সহয়তায় তিনি থানায় গিয়ে রকি শেখের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন। এসময় তিনি আরো অভিযোগ করেন, মামলার পর রকির আব্বা আমজেদ শেখ তাকে ৩০ হাজার টাকায় ঘটনার মিমাংসার প্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আমজেদ শেখ তার ছেলের কিছু হলে আমার ও স্বাক্ষীদের দেখে নেবার হুমকি দিচ্ছেন। মামলার এক স্বাক্ষী বারিকুল ইসলাম মুক্ত হুমকির বিষয়ে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আদালতে ধর্ষিতার জবানবন্ধীসহ আলামত নিয়ে ডিএনএ’ টেস্টের জন্য স্যাম্পল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: এজাজ শফী বলেন, ধর্ষককে গ্রেফতারে সব রকমের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।